প্রতিনিধি ময়মনসিংহ

মিজানুর রহমান (বাঁয়ে) ও মো. মাজহারুল ইসলাম | ছবি: সংগৃহীত

১৪ বছর আগের একটি ঘটনায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান ও একই থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে একটি মামলার এজাহারে আসামির নাম বদলে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

রোববার ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এ কে এম ছিফাতুল্লাহ্ এই মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কত দিন তদন্ত চলবে তা বিচারকের ওপর নির্ভর করবে

ওসি মিজানুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত। আর মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক হয়েছেন। তাঁর বর্তমান কর্মস্থল সিআইডির প্রধান কার্যালয়।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরগঞ্জ থানার মিজানুর রহমান ও মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর গ্রামের মো. গিয়াস উদ্দিন। ওই দিন বিচারক এ কে এম ছিফাতুল্লাহ আবেদনটি আমলে নেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান কবির বলেন, মরিচারচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর প্রতিপক্ষের লোকজন গিয়াস উদ্দিনের ছোট ভাই শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আঘাতজনিত কারণে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে মারা যান শফিকুল ইসলাম। শুরুতে মারামারির ঘটনায় গিয়াস উদ্দিন থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ করা হয়। আদালত ওই দিন অভিযোগটি থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।

এই আইনজীবী বলেন, ওসি মো. মিজানুর রহমান এসআই মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে থানায় ডেকে এনে বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন। পরে আদালত থেকে বাদী মামলার কাগজপত্র তুলে দেখেন যে মামলাটি নথিবদ্ধ করা হয়েছে, তাতে ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা মো. আবদুর রশিদের নাম লিখে রাখা হয়েছে।

শাহজাহান কবির আরও বলেন, পরে তদন্ত কর্মকর্তা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। এ নিয়ে বাদী নারাজি দিলে সিআইডি তদন্ত করে। তাদের অভিযোগপত্রেও প্রধান আসামির নাম বাদ দেওয়ায় বাদী সংক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি জানান, এই ঘটনায় আদালতে নতুন করে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

আর তৎকালীন এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শুধু তদন্ত করেছি। এখানে আমার কোনো দায় নেই। তদন্তে ঘটনা সত্য হলেও সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে এখন মামলায় জড়ানো হয়েছে।’