প্রতিনিধি রাজশাহী

রাজশাহী নগরের পঞ্চবটী এলাকার খড়বোনার গাড়োয়ানপাড়ায় যুবলীগ কর্মীকে গুলি ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যা মামলার আসামি যুবলীগ কর্মী রবিউল ইসলামকে গুলি ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নগরের পঞ্চবটী এলাকার খড়বোনার গাড়োয়ানপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত রবিউল ইসলাম ওরফে রবি (৪০) রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকার আজিজুল ইসলাম ওরফে হাবলের ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কর্মচারী। রবিউলের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম ৩০ নম্বর ওয়ার্ড (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁরা দুই ভাই শিবির নেতা নোমানী হত্যা মামলার আসামি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চবটী এলাকার গাড়োয়ানপাড়ায় রবিউল ইসলাম ভাড়া বাসায় থাকেন। বাড়ির সামনে গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে চার–পাঁচজন মোটরসাইকেলে এসে গুলি ছোড়েন। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যান। এতে রবিউল বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তাঁর অন্য পা এবং দুটি হাতে জখম হয়েছে। পরে তাঁকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে ঘটনাস্থলে পাঁচটি গুলির খোসা পাওয়া গেছে।

ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, রবিউল বাড়ির পাশে মোটরসাইকেল থামিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কয়েকটি মোটরসাইকেল আসে। প্রথমে গুলির শব্দ শোনা যায়। একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপাতে থাকেন। রবিউল মোটরসাইকেল থেকে দৌড়াতে গিয়ে পড়ে যান। এরপর তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। শেষে একজন একেবারে কাছ থেকে তাঁর পা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এরপর হামলাকারীরা চলে যান। এ সময় আহত রবিউল বলতে থাকেন, ‘ও বাপ ও মা আমি কী করেছি।’ এ সময় দুজন নারী ছুটে আসছিলেন; তবে গুলির শব্দ পেয়ে আবার তাঁরা ফিরে যান। পাশ থেকে নারীরা চিৎকার করছিলেন।

এ বিষয়ে গতকাল রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বরিউলের পায়ে গুলি লেগেছে। তিনি হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে আছেন। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

ঘটনাস্থলে পড়ে আছে গুলির খোসা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী বিনোদপুর বাজারে ছাত্রশিবির, ছাত্রলীগ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানী নিহত হন। ওই মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ও তাঁর বড় ভাই শহিদুল ইসলাম। গত ৫ আওয়ামী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শহিদুল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর তাঁদের ভাইদের নামে একাধিক মামলা হয়েছে।