প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদকে কারাগারে পাঠান আদালত। বুধবার বিকেলে আদালত প্রাঙ্গণে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বাসা থেকে আটক গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন আদালত। তাঁকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১২ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার রেলস্টেশন এলাকার বাড়ি থেকে যৌথ বাহিনী সেলিম মাহমুদকে আটক করে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে। বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাসুমের আদালতে তাঁকে হাজির করা হয়। তাঁকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন জানালে বিচারক আগামীকাল বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেলিম মাহমুদ বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য ও গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা কমিটির সভাপতি।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান জানান, রূপগঞ্জ থানার পৃথক দুটি মামলায় সেলিম মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ ও সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রিমান্ড আবেদনে রবিনটেক্স কারখানায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, রাস্তা অবরোধ, পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা, উসকানি নিয়ে পোশাক কারখানায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছেন। শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

এদিকে সেলিম মাহমুদকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাঁর মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিখিল দাস। তিনি বলেন, শ্রমিকদের পক্ষে দাবিদাওয়া নিয়ে কাজ করার কারণে সেলিম মাহমুদকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শুধু হয়রানি করার জন্যই তাঁকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সেলিম মাহমুদের স্ত্রী বীথি মাহমুদ প্রথম আলোকে জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁদের বাড়ির গেট ভেঙে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘরের ভেতরে ঢুকে তাঁর স্বামী সেলিম মাহমুদকে তুলে নিয়ে গেছেন। যৌথ বাহিনী বাসা থেকে তিনটি মুঠোফোনও নিয়ে গেছে। বীথি মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, মুঠোফোনের জন্য তাঁর ছোট ছেলে ওয়াজিদ মাহমুদকে লাঠি দিয়ে পায়ে আঘাত ও থাপ্পড় দিয়েছে যৌথ বাহিনী। তাঁর স্বামী সেলিম মাহমুদ উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগে অসুস্থ বলেও জানান তিনি।

৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর সংঘর্ষে সেনাবাহিনী-পুলিশসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন। ছাঁটাই বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করলে ওই সংঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় হামলা, ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রূপগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।