প্রতিনিধি রাজশাহী
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নে ফেরিঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পদ্মা নদীর বিদিরপুর ঘাটে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এতে চর আষাড়িয়াদহ ও আলাতুলী ইউনিয়নের মানুষজন অংশ নেন।
প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ঘাট এলাকায় জড়ো হন। ‘ঘাট নয়, যেন মরণফাঁদ’, ‘চাঁদাবাজি বন্ধ করো’, ‘সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই ঘাটের ইজারা রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসন দিয়ে থাকে। ঘাট ইজারার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু ঘাটের সরকারি ইজারামূল্য বেশি হওয়ায় কেউ ঘাট নেয়নি। পরে স্থানীয়ভাবে কয়েকজনকে ২৮ দিনের জন্য দেড় লাখ টাকায় ঘাটটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা দুই দিন ধরে ঘাট পরিচালনা করছেন। কিন্তু পারাপারের জন্য প্রশাসন যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা মানাছেন না ঘাটের মাঝিরা। তাঁরা অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, তাঁদের এই ঘাট ছাড়া চলাচলে বিকল্প কোনো পথ নেই। কিছুদিন আগে ঘাট ইজারা হয়েছে। ইজারাদাররা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। একজন মানুষ নৌকা দিয়ে পার হলে সরকার নির্ধারিত টোল পাঁচ টাকার জায়গায় ২০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এতে এলাকাবাসী বিপাকে পড়েছেন।
চরের বাসিন্দা আব্দুল্লাহীল কাফি জানান, ঘাটমালিকদের কাছে তাঁরা জিম্মি। জেলা পরিষদ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেওয়া হলেও তাঁরা সেটি মানছেন না। জোর করে তাঁদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা অতিরিক্ত টাকা দিতে চান না।
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসরাফুল ইসলাম বলেন, তাঁর এলাকার মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। জেলা পরিষদের নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে কারও কাছ থেকে একটি টাকাও নেওয়া যাবে না। তিনি ঘাটমালিকদের বলে দিয়েছেন সে অনুযায়ী ভাড়া নিতে।
অভিযোগের বিষয়ে ইজারাদারদের একজন হামিদুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঘাটের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ঘাটটি কেউ নেয়নি। পরে এক মাসের জন্য তাঁরা ঘাটটি নিয়েছেন। কিন্তু সাত-আট কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে জনপ্রতি মাত্র পাঁচ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা চালাতে দুজন মানুষের প্রয়োজন হয়, পাঁচ টাকায় তাঁরা কী নিবেন, আর আমরা কী নেব। তাই ভাড়া সংশোধনের জন্য বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান বলেন, একজন মানুষ পারাপারে সর্বনিম্ন ভাড়া পাঁচ টাকা নির্ধারণ করে তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে এটি নিয়ে দুই দিন ধরে ঝামেলা হচ্ছে। এই সমস্যা নিরসনে তাঁরা কাজ করছেন।