প্রতিনিধি রায়গঞ্জ

অভিরূপের পোষ মানা দুটি শঙ্খচিলের একটি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

সোমবার ছিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। তখন বিকেল গড়িয়ে গেছে। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ক্ষীরতলা কমল খাঁ দিঘির পাড়ে আয়োজিত চড়কপূজা দেখতে যাওয়ার পথে থমকে দাঁড়াতে হলো। দেখা গেল, একজনের হাতের ওপর বসে আছে একটি শঙ্খচিল পাখি।

কাছে গিয়ে জানা গেল, উপজেলার কলিয়া গ্রামের অভিরূপ কুমার মাহাতো (অনিক) প্রায় আড়াই মাস আগে বাড়ির পাশে তালগাছ থেকে ঝড়ে পড়া শঙ্খচিলের তিনটি ছানা কুড়িয়ে পান। উপজেলার সরকারি বেগম নূরুননাহার তর্কবাগীশ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি।

শঙ্খচিলের তিনটি ছানা কুড়িয়ে এনেছিল অভিরূপ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আলাপে জানা গেল, কলিয়া গ্রামের কৃষক বিমল কুমার মাহাতো ও অরুণা রানী মাহাতোর বড় ছেলে অভিরূপ। কুড়িয়ে পাওয়ার পর ছানা তিনটিকে বাড়িতে নেন তিনি। আদরযত্ন করেন। দুটি শঙ্খচিল তাঁর পোষ মেনেছে। বাকি একটা তিনি বন্ধুকে উপহার দিয়েছেন। খাওয়ানো থেকে শুরু করে পরিষ্কার রাখা, সব কাজ তিনি একাই করেন। শঙ্খচিল দুটি তাঁর এমন ভক্ত হয়েছে যে তিনি যেখানেই যান, তারাও সঙ্গে যায়। তবে নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি একসঙ্গে দুটি পাখিকে নিয়ে বের হন না। একটিকে নিয়ে যান, আরেকটিকে রেখে যান।

পাখি দুটির মাছ ও মাংস পছন্দ জানিয়ে অভিরূপ বলেন, সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁর পরিবার এসব খাবারের জোগান দেয়। তাঁর মা–বাবা প্রথম দিকে বিরক্ত হলেও পোষ মেনে যাওয়ায় এখন তাদের পরিবারের অংশ মনে করেন।

শঙ্খচিল দুটিকে খাওয়ানো থেকে শুরু করে পরিষ্কার রাখা, সব কাজ অভিরূপ একাই করেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

অভিরূপের সঙ্গে থাকা শঙ্খচিল দেখতে ততক্ষণে অনেকে ভিড় করেন। তাঁদের একজন মাহাতোদের কুড়মালি ভাষার লেখক উজ্জ্বল কুমার মাহাতো বলেন, ‘নানা ধরনের পাখি মানুষের পোষ মানে শুনেছি। কিন্তু আজ দেখলাম শঙ্খচিলও মানুষের পোষ মানে।’