নিজস্ব প্রতিবেদক

ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। আজ সোমবার রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে লিখিত বক্তব্য দেন তিনি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

দেশের মানুষ সর্বজনের শান্তি-স্বস্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধর্ম-জাতি-বিত্তের বিভাজন ভাঙবে। গড়বে উদার সম্প্রীতির সহিষ্ণু সমাজ। এমন আলোকিত দেশ ও সমাজের স্বপ্ন দেখেন বলে উল্লেখ করেছেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, সবাই ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, মুক্তচিন্তার নির্ভয় প্রকাশ, আবহমান সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা হৃদয়ে ধারণ করলে মুক্তির আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুগম হবেই।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন সারওয়ার আলী।

আজ ভোর সোয়া ছয়টায় রমনা বটমূলে শিল্পী সুপ্রিয়া দাশের কণ্ঠে ভৈরবী রাগালাপের মাধ্যমে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ হয় সকাল সাড়ে আটটার দিকে।

অনুষ্ঠান শেষ করার আগে ‘নববর্ষের কথন’ বিষয়ে বক্তব্য দেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, মুক্তির অন্বেষায়, দীর্ঘ বন্ধুর পথপরিক্রমায় অর্ধশতবর্ষ পূর্বে, বিপুল আত্মদানের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এই যাত্রাপথের নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে। ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয়েছে বাঙালির শিল্প, সাহিত্য, সংগীতসহ সব মাধ্যম ও বিভিন্ন স্থাপনায়। বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রামে অনন্য মাত্রা যুক্ত করেছে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে এই অসাম্প্রদায়িক উৎসব, নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার আয়োজন।

সারওয়ার আলী বলেন, ‘আমরা এক আলোকিত দেশ ও সমাজের স্বপ্ন দেখি, যে দেশের মানুষ সর্বজনের শান্তি-স্বস্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধর্ম-জাতি-বিত্তের বিভাজন ভাঙবে, গড়বে উদার সম্প্রীতির সহিষ্ণু সমাজ।’

বাঙালির মানবতার মুক্তির সাধনা স্বাধীন আপন দেশেও প্রত্যাশা ও আশাভঙ্গের নানা চড়াই-উতরাইয়ের দোলাচল প্রত্যক্ষ করেছে বলে উল্লেখ করেন সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, নববর্ষের উষালগ্নে, আজ চোখ ফেলি হিসাব-নিকাশের হালখাতায়। একদিকে মুক্তির জন-আকাঙ্ক্ষা অর্জনের প্রত্যাশা, অন্যদিকে পীড়াদায়ক বিদ্বেষ-বিভক্তি, নারী-শিশুর অমানবিক মর্যাদাহানি ও অপরিণামদর্শী অসহিষ্ণুতা। সব অতৃপ্তি প্রতিবিধানের দায় রাষ্ট্রের, তবে সমাজকেও সে দায় নিতে হয় বৈকি। সবাই ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, মুক্তচিন্তার নির্ভয় প্রকাশ, আবহমান সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা হৃদয়ে ধারণ করলে মুক্তির আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুগম হবেই।