সয়াবিন তেল | ফাইল ছবি

সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন নতুন মূল্যের কথা জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।

অবশ্য ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো বলছে, নতুন দরের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বাড়াতে চেয়ে ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানাগুলোর সমিতি গত ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩১ মার্চ। দাম বাড়াতে চাওয়ার কারণ এটাই।

বিষয়টি নিয়ে ৬ এপ্রিল ও ৮ এপ্রিল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন পরিশোধন কারখানার মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।

তবে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার নিচে নির্ধারণের পক্ষে। আর মিলমালিকদের চাওয়া ১৯০ টাকার বেশি। উভয় বৈঠকে দর-কষাকষি হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

আগামী মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ বিষয়ে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আবার বৈঠক বসছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজ রোববার এক চিঠি পাঠিয়ে টিকে, মেঘনা, সিটি গ্রুপের প্রতিনিধিদের মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলেছে। চিঠি পাঠানো হয়েছে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ভোজ্যতেল কারখানা মালিক সমিতির সভাপতির কাছেও।

৮ এপ্রিল এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ নিয়ে বলেছিলেন, ‘ছয় মাস ধরে ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। লম্বা সময় এ ধরনের সুযোগ বজায় রাখার বাস্তবতায় এনবিআরের নেই। আপাতত কর অব্যাহতির পক্ষে থাকাটা আমাদের জন্য কঠিন।’

এদিকে ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন আজ ট্যারিফ কমিশনে এক চিঠি পাঠিয়ে নতুন দর নির্ধারণের কথা জানিয়েছে। তারা বলেছে, বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে ১৮৯ টাকা হচ্ছে, যা এত দিন ১৭৫ টাকা ছিল। আর পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম হচ্ছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা ছিল। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন ও পামতেলের নতুন দাম প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা ছিল ১৫৭ টাকা।

বিজ্ঞপ্তি আকারে দেওয়া এ চিঠিতে অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম মোল্লার স্বাক্ষর রয়েছে। যোগাযোগ করলে নুরুল ইসলাম মোল্লা চিঠি দেওয়ার কথা  স্বীকার করেন। তবে তিন পরিশোধন কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানান, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে আগামী মঙ্গলবার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবারের বৈঠকের আগে আজ অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়াটা ঠিক হয়নি। এতে বাজারে কারসাজি করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কেউ বেশি দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করলে ভোক্তা যেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান।