নিজস্ব প্রতিবেদক
শেষ হয়ে এল আরও একটি বছর। আজ রোববার শেষ হচ্ছে বঙ্গাব্দ ১৪৩১। আগামীকাল শুরু হবে বাংলা নতুন বছর ১৪৩২। মহাকালের গর্ভে বিলীন হতে চলল আরও একটি বছর। চৈত্র মাসের শেষ দিন তাই আজ চৈত্রসংক্রান্তি। একসময় এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উৎসব হতো চৈত্রসংক্রান্তিতে।
বছরের শেষ দিনে অনেকেই বাড়িঘর বিশেষভাবে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করে থাকেন। আবর্জনা পুড়িয়ে বাড়ির আশপাশে ধোঁয়া দেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই বাড়ির আঙিনায় বা ঘরের বারান্দায় মাঙ্গলিক আলপনা আঁকেন। সমাগত নতুন বছরটিতে বিগত বছরের সব অকল্যাণ, বিপদ–আপদ, রোগশোক থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থাকে এসব আয়োজনে। শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পুণ্যময় বলে মনে করা হয়।
খাবারেও বিশেষত্ব থাকে চৈত্রসংক্রান্তিতে। আগের দিনে তিক্ত স্বাদের শাক রান্না হতো এই দিনে। এসব শাক হাটবাজার থেকে কেনা নয়, বউঝিরা বাড়ির আশপাশের ঝোপজঙ্গল, ভিটেজমি থেকে সংগ্রহ করতেন। সাত বা এগারো রকম তিক্ত শাকের মিশেলে এই বিশেষ ধরনের রান্না স্বাদে যেমন বৈচিত্র্য আনে, তেমনি গ্রীষ্মের মৌসুমি রোগব্যাধির প্রতিরোধক্ষমতা সৃষ্টি করে। সে কারণে সংক্রান্তির এসব খাদ্য রোগব্যাধির প্রতিকার হিসেবেও কাজ করে। এখন আধুনিক জীবনযাত্রায় শহরে তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও ঔষধি গুণসম্পন্ন বহু গাছ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এসব রান্নার চলও উঠে গেছে।
এ ছাড়া চৈত্রসংক্রান্তিতে দেশের অনেক এলাকায় চড়ক ও নীলপূজার আয়োজন করা হতো। চড়কপূজা উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী লোক ও কারুশিল্প এবং মিষ্টান্নের পসরা সাজিয়ে গ্রামীণ মেলা বসত। এখনো কিছু কিছু এলাকায় চড়কপূজার চল রয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা উদ্যাপিত হবে চৈত্রসংক্রান্তি।
রাজধানীতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনে বিদায় দিচ্ছে বাংলা বছর ১৪৩১ সনকে। চারুকলা অনুষদের আয়োজনে চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান শুরু হবে বকুলতলায় বেলা তিনটায়। চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে আজ বেলা দুইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত হবে ‘ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’। সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ আয়োজন।