প্রতিনিধি জয়পুরহাট

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার শালুককুড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া গুলিবিদ্ধ ইগল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মাঠের ধানখেত দেখতে গিয়েছিল দুই কিশোর। খেতের ভেতর হঠাৎ একটি বড় ইগল পড়ে থাকতে দেখে তারা। কাছে যেতেই ইগল পাখিটি চোখ রাঙানো শুরু করে। প্রথমে ভয় পেয়ে যায় কিশোরেরা। এরপর তারা সাহস করে যন্ত্রণায় কাতর পাখিটির কাছে যায়। ধানখেত থেকে জমির আইলে তুলে এনে দেখে, দুটি ডানায় ক্ষতচিহ্ন ও রক্ত।

এরপর প্রায় চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অসুস্থ ইগলটিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে আসে তারা। সেখানে ইগলটিকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হয়। ইগলের দুই ডানায় গুলি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান।

মো. সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

দুই কিশোরের এমন কাজে প্রশংসা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই দুই কিশোর হলো মো. সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী। তাদের বাড়ি পাশের নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার খাদাইল বাহ্মণপুকুর গ্রামে।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পাশে একটি দোকানে গিয়ে দেখা যায়, অসুস্থ ইগলকে দোকানের একটি টেবিলে রাখা হয়েছে। সেখানে লোকজন ভিড় করেছেন। সেখানে ১৩–১৪ বছর বয়সী ওই দুই কিশোরও ছিল।

সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী বলে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তারা বদলগাছী উপজেলার শালুককুড়ি মাঠে নিজের ধানখেত দেখতে গিয়েছিল। জমির আল দিয়ে যেতেই একটি ইগল পাখিকে ধানখেতে পড়ে থাকতে দেখে। সাহস করে ইগল পাখির কাছে গিয়ে দুটি ক্ষতচিহ্ন ও রক্ত দেখতে পায়। তারা পাখিটিকে সুস্থ করতে আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে আসে। উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইগলের দুটি পাখা ড্রেসিং করে ইনজেকশন দিয়েছেন।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপসহকারী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ইগল খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। দুই ডানায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। প্রায় চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দুই কিশোর পাখিটিকে চিকিৎসা করাতে এনেছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ড সত্যিই প্রশংসনীয়। যারা ইগলটিকে গুলি করেছে, তারা নিকৃষ্ট মনের মানুষ।

অসুস্থ ইগল পাখিটি আক্কেলপুর পৌর শহরের নিচা বাজার এলাকার মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দিতে সম্মত হন। এরপর ইগল পাখিটিকে তাঁর জিম্মায় দেওয়া হয়। মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমি ইগল পাখিকে নিজের বাড়িতে রাখব। যত দিন লাগে ইগলকে সুস্থ করব। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে নিয়মিত প্রাণিসম্পদ দপ্তরে আনব।’