প্রতিনিধি মাদারীপুর

মাদারীপুরের কালকিনিতে হামলা চালিয়ে পুলিশের কাছ থেকে ২ আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার পর তাঁরাসহ হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। বৃহস্পতিবার রাতে কালকিনি পৌরসভার মাছবাজার এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মাদারীপুরের কালকিনিতে ইয়াবাসহ আটক দুই যুবককে হাতকড়া পরা অবস্থায় পুলিশের কাছ থেকে স্থানীয় জনতা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় অতর্কিতে হামলায় আহত হয়েছেন পুলিশের চার সদস্য।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কালকিনি পৌরসভার মাছবাজার এলাকায় এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৩০ জনকে আটক করেছেন।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কালকিনির বড়ব্রিজ এলাকা থেকে দুই যুবককে ইয়াবাসহ পুলিশ আটক করে বলে জানিয়েছেন কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা। তাঁরা হলেন পৌর এলাকার ঠ্যাঙ্গামারা গ্রামের রাশেদুল খান (৩৫) ও আল আমিন সরদার (৩০)। রাশেদুল খান কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বাকামিনের ছোট ভাই বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পলাতক আসামিদের কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।

অন্যদিকে হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন কালকিনি থানার এসআই আবুল বাশার, এএসএই সোহেল রানা এবং পুলিশ কনস্টেবল কাজী স্বপন ও আতিকুল ইসলাম।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় বড়ব্রিজ এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ৫টি ইয়াবাসহ আল আমিন ও রাশেদুলকে আটক করা হয়। তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে মাছবাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে পুলিশের ওপর হামলা চালান আটক ব্যক্তিদের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় পুলিশের ওই চার সদস্যকে পিটিয়ে আহত করেন হামলাকারীরা। পরে হাতকড়া পরা অবস্থায় দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে কালকিনি থানার অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে ওই আসামিসহ হামলাকারীদের ধরতে যৌথ অভিযানে নামে সেনাবাহিনী, কালকিনি থানা ও জেলা পুলিশ।

রাকিব হাসান নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আটক রাশেদুল কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বাকামিনের ছোট ভাই। ঘটনাস্থলটি তাঁদের বাড়ির কাছাকাছি এবং পুরো মাছবাজারে তাঁরা এখনো প্রভাব বিস্তার করেন। রাশেদুলের আটকের খবরে সেখানে তাঁর স্বজনেরা লোকজন জড়ো করে মব তৈরির চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে স্থানীয় ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। যাঁরা এই হামলার ঘটনায় জড়িত, তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আর পলাতক ওই দুই আসামিকে ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’