প্রতিনিধি বরিশাল
নিহত শরীফুল দফাদার | ছবি: সংগৃহীত |
বরিশালের হিজলায় এক জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বাজারসংলগ্ন পালপাড়া গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। দিবাগত রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত জেলের নাম শরীফুল দফাদার (২৪)। তিনি ধুলখোলা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের দিনমজুর হানিফ দফাদারের ছেলে।
পুলিশ জানায়, মেঘনা নদীতে চলাচলকারী পণ্যবাহী বিভিন্ন জাহাজ থেকে তোলা চাঁদার টাকার ভাগাভাগির অভিযোগ তুলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন।
শরীফের বন্ধু মো. সোহাগ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। ঘটনার সময় তিনিও হামলার শিকার হন। তিনি বলেন, ‘ধুলখোলা ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বাজারসংলগ্ন পালপাড়া গ্রামের শাহীন আকনের বাড়ির সামনে এলাকায় জাহাজ নোঙর করা ছিল। গতকাল রাত ৯টার দিকে ওই জাহাজ থেকে চাঁদা তোলার অপবাদ দিয়ে শরীফুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় একই এলাকার আল আমিন, বাবুল, রাজিব, নোমান, মাইদুলসহ বেশ কয়েকজন। এ সময় শরীফুলের ডাকচিৎকার শুনে আমি ও আরফান এগিয়ে এলে আমরাও হামলার শিকার হই। একপর্যায়ে শরীফুল প্রাণে বাঁচার জন্য দৌড়ে শাহীন আকনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানে গিয়েও হামলা চালানো হয়। পরে আশপাশের লোকজন শরীফকে উদ্ধার করে প্রথমে মেহেন্দীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেওয়ার পথে শরীফুলের মৃত্যু হয়।’
শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক শরীফুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
পালপাড়া গ্রামের চৌকিদার আলী আশরাফ বলেন, ‘শরীফুল, সোহাগসহ তিনজন ইলিশ মাছ ধরে বিক্রি করে নিজের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করছিল। এ সময় জাহাজ থেকে টাকা উত্তোলন করে ভাগাভাগি করছে—এই অভিযোগ তুলে তাদের ওপর হামলা করে প্রতিপক্ষ আল আমিনসহ পাঁচ থেকে ছয়জন।’
আল আমিন, বাবুল, রাজিব, নোমান, মাইদুলসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ঘটনার পর থেকে পলাতক। মুঠোফোনও বন্ধ থাকায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, গতকাল তারাবিহ নামাজের পর আলীগঞ্জ বাজারসংলগ্ন মেঘনা নদীর পাড়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। পণ্যবাহী জাহাজ থেকে চাঁদা উত্তোলন নিয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাদানুবাদ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন। শরীফুল হত্যার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।