প্রতিনিধি রাজশাহী

দুই ঘণ্টা ব্যাংক খুলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার ঘোষণার পর শুক্রবার সকালে ব্যাংকের দরজা খোলার আগেই উপচে পড়া ভিড়। রাজশাহী নগরের আলু পট্টি এলাকায় সোনালী ব্যাংকের করপোরেট শাখায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

সকালবেলা ব্যাংকের দরজা খোলার আগেই কলাপসিবল গেটের ফাঁক দিয়ে অন্তত ১০০টি চেক ভেতরে ঢুকে গেছে। সাড়ে নয়টার দিকে গেট খোলার পরে আর চেক নেওয়া হচ্ছিল না। এ নিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষকেরা। বন্ধের দিনে দুই ঘণ্টার জন্য ব্যাংক খুলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের (স্কুল ও কলেজের) বেতন দেওয়ার ঘোষণায় রাজশাহীতে সোনালী ব্যাংকের করপোরেট শাখার সামনে এই দৃশ্য দেখা গেছে।

শুক্রবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে ব্যাংকের ওই শাখায় গিয়ে দেখা যায়, কলাপসিবল গেট তখনো লাগানো আছে। সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষকেরা ভেতরের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। তাঁরা ভেতর থেকে বলছেন, চেক নেওয়া হবে না। বাইরে তখনই শ খানেক শিক্ষক এসে পড়েছেন। নিচ থেকে আরও শিক্ষক আসছিলেন। তাঁরা কী করবেন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না।

সকাল সোয়া নয়টার দিকে এসেছিলেন রাজশাহী নগরের রানীবাজার গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক আরামুল হক। তিনি বলেন, এত সকালে এসেও তিনি চেক জমা দিতে পারেননি। একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিরিনা পারভীনও চেক জমা দিতে পারেননি। তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘২৭ রমজানের রাত গেল, মানুষ রাত জেগেছে। তারপর সাতসকালে উঠেই দৌড় দিয়েছেন ব্যাংকে। এটা একটা কাজ! আবার বলছে, টাকা নেই, সাড়ে ১০টায় টাকা আসবে, তারপরে বেতন দেওয়া হবে।’

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মোহনগঞ্জের একজন ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে কোনো কথাই বলতে চান না। অন্যদিকে তাকিয়ে বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে নাটক করা হচ্ছে। এখন কথা বলেই আর কী করব?’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরে অবশ্য বাইরের শিক্ষকদের চেক নেওয়া শুরু হয়। রাজশাহীর সোনালী ব্যাংকের সব শাখাতেই একই অবস্থা হয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের চারঘাট শাখায় এসেছিলেন উপজেলার ভাটপাড়া হাইস্কুলের শিক্ষক এমদাদুল হক। তিনি বলেন, ‘মার্চ মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে। বেতনের এসএমএস পেয়েছি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে। সকালে এসে ব্যাংকে এই ভিড়। আপনারা এসে দেখে যান বেতন নিয়ে শিক্ষকদের শেষ পর্যন্ত কী অবস্থা হয়।’