পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক

ইসরাইলি হামলায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দারা রমজানে বর্ণিল আলোকসজ্জা ও ব্যানার দিয়ে সাজিয়েছেন রাস্তা। ২৭ ফেব্রুয়ারি | ছবি: সংগৃহীত

ইসরাইলি বর্বরতার ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের বাসিন্দারা রমজানের প্রথম সম্মিলিত সেহরির আয়োজন করেছেন। 

শনিবার ভোররাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের চারপাশে জড়ো হয়ে সিয়াম সাধনার প্রস্তুতিতে অংশ নেন স্থানীয়রা। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে রমজানের ঐতিহ্য বজায় রাখতে রাস্তাগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জা দিয়ে।

জর্ডান রিলিফ ইনিশিয়েটিভের স্বেচ্ছাসেবক সুলাইমান আল-ফাররা বলেন, 'যুদ্ধ আর ধ্বংসের মধ্যেও আমরা ধ্বংসস্তূপে সম্মিলিত সেহরির আয়োজন করে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছি। বাস্তুচ্যুত ও ঘরহারা পরিবারদের জন্য সাজসজ্জা করে উৎসবের আবহ তৈরি করেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'দীর্ঘ একটি টেবিল ঘিরে শিশুসহ কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি তাদের ধ্বংসস্তূপে পরিণত বাড়ির পাশে জড়ো হয়েছিলেন, একাত্মতা ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে। বিপর্যয়ের মুখেও তাদের এই সমবেত হওয়া সহমর্মিতা ও প্রতিবাদেরই পরিচয় দেয়।"

বয়োজ্যেষ্ঠ গাজাবাসী আবু সুফিয়ান বলেন, 'আল্লাহর রহমতে ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থকদের সহায়তায় আমরা শিশুদের মুখে আনন্দ ফেরাতে পেরেছি। রক্তপাত আর ধ্বংসের মধ্যেও আমরা মনোবল হারাইনি। যুদ্ধের আগে যেমন করতাম, এখনো সেই ঐতিহ্য ধরে রাখছি।'

এই রমজান ফিলিস্তিনিদের জন্য বেদনাবিধুর এক সময়। পবিত্র মাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ইসরাইলি হামলায় লাখো মানুষের প্রাণহানি ও ধ্বংসের শোক, দুই মিলিয়ে এক কঠিন বাস্তবতা তৈরি করেছে। গাজার প্রায় ৮৮ ভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

গত মাস থেকে যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৩৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গত নভেম্বরে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, এবং জাতিসংঘের আদালতেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে।