ক্রীড়া প্রতিবেদক

জয়ের পর আফগানিস্তান ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাস | ছবি: এক্স

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেরা ম্যাচটাই কি হয়ে গেল আজ? হয়তো। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত যে নাটক হলো, তাতে শুধু এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসেই অন্যতমই সেরা ম্যাচ হয়ে থাকবে আফগানিস্তান-ইংল্যান্ডের এই লড়াই। ইব্রাহিম জাদরানের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি, দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে জো রুটের পাল্টা জবাব, এক সময় লাগাম ইংল্যান্ডের হাতে চলে যাওয়া, সেখান থেকে আফগানদের নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো, কী ছিল না ম্যাচে! এত নাটকের পর শেষ হাসিটা হাসল আফগানরাই, ৮ রানে জিতে টিকে থাকল চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। অন্যদিকে পরপর দুই হারে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শেষ হয়ে গেল অন্যতম ফেবারিট ইংল্যান্ডের।

আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩২৫ রান তুলেছিল আফগানরা। তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড ৪৯.৫ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ৩১৭ রানে।

বাঁচা-মরার লড়াইয়ের ম্যাচে আফগানিস্তানকে স্বপ্ন দেখানোর শুরুটা করেন জাদরান। খেলেন ১৪৬ বলে ১৭৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। চার দিন আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডেরই বেন ডাকেটের ১৬৫ রানের রেকর্ড ভেঙে ছাড়িয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোরের নতুন রেকর্ড গড়েন আফগান এই ওপেনার। ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক তিনি ছিলেন আগে থেকেই, আজ সেই রেকর্ডও গড়লেন নতুন করে। সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০২৩ বিশ্বকাপেও। আফগানিস্তানের হয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটসম্যানের নামও ইব্রাহিম জাদরান। 

তাড়া করতে নেমে ১৩৩ রানে ইংল্যান্ডের ৪ উইকেট চলে গেলেও জশ বাটলার ও জো রুট দারুণ এক জুটি গড়ে ম্যাচটা প্রায় নিজেদের হাতে নিয়ে আসেন। বাটলার ৪২ বলে ৩৮ করে আউট হলেও রুট টিকে ছিলেন ৪৬তম ওভার পর্যন্ত। ১১১ বলে ১২০ রান করে আজমতউল্লাহর বলে উইকেটের পেছনে রুট ক্যাচ দিয়ে ফেরার পরই আসলে ম্যাচটা কঠিন হয়ে যায় ইংল্যান্ডের জন্য। জেমি ওভারটন (২৮ বলে ৩২ রান) ও জফরা আর্চার (৮ বলে ১৪) তারপরও চেষ্টা করে গেছেন। তবে রানের সঙ্গে বলের ব্যবধান কমাতে গিয়ে উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৩ রান, হাতে ছিল মাত্র একটা উইকেট। আদিল রশিদ ও মার্ক উড পারেননি ইংল্যান্ডকে দারুণ এক জয় এনে দিতে।

২৮ ফেব্রুয়ারি লাহোরে আফগানিস্তান গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেই ম্যাচটা এখন অলিখিত ‘কোয়ার্টার ফাইনাল’ হয়ে গেছে।

১ মার্চ করাচিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। ওই ম্যাচে জয়-হারে অবশ্য কোনো লাভ–ক্ষতি নেই ইংল্যান্ডের।