নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী

রাজধানীর মহিলা সমিতিতে নির্ধারিত ‘ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব’ স্থগিত করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। আজ এই উৎসব আয়োজনের কথা ছিল।

উদীচীর বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৪ দিনব্যাপী এ নাট্যোৎসবের জন্য দুই মাস ধরে ঢাকার ৮৫টি নাট্য দলের কয়েক শ কর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করে গণ–অর্থায়নে সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। তবে উৎসবের উদ্বোধনের আগের দিন মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে আয়োজকদের জানানো হয়, রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

উদীচীর বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে উৎসবের বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে। সাধারণত মিলনায়তনের ভেতরে কোনো প্রদর্শনীর জন্য পুলিশ বা সরকারের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তারপরও আলোচনার পর নিরাপত্তার আশ্বাসে আয়োজকেরা ফিরে আসেন। কিন্তু এর কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি মব থানায় ঢুকে হুমকির স্বরে গালাগাল করা ও মহিলা সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে উৎসব বন্ধ করতে চাপ দেয়। ফলে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে মৌখিকভাবে হল বরাদ্দ বাতিল করে।’

বিবৃতিতে উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ ধরনের মব সৃষ্টির মাধ্যমে যেকোনো সুস্থধারার সংস্কৃতিচর্চাকে বাধাগ্রস্ত করার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

‘শিল্পের আলোয় ভরে উঠুক মঞ্চের আঙিনা, দর্শকই স্বজন, দর্শকই প্রেরণা’ প্রতিপাদ্যে আজ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব শুরুর কথা ছিল। কিন্তু গতকাল শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এরপর তাঁরা নাট্যোৎসব বাতিলের ঘটনা নিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।

ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদের আহ্বায়ক ঠান্ডু রায়হানের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘থানায় নিরাপত্তা সহযোগিতা চেয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়ে আসার কিছুক্ষণ পর একটি মব থানায় ঢুকে একরকম হুমকি দিয়ে মহিলা সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে উৎসব বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়। এমন পরিস্থিতিতে মহিলা সমিতির কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে রাতেই মৌখিকভাবে আমাদের হল বরাদ্দ বাতিল করে।’

বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, ‘গতকাল রাতে কে বা কারা অন্ধকারে মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহীম মিলনায়তন থেকে উৎসবের সাজসজ্জা খুলে নিয়ে যায়। এরপরও নাটকের স্বার্থে আমরা থানার ওসির সঙ্গে আলোচনা করি। এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ও ভালোবাসায় আয়োজন করা প্রাণের নাট্যোৎসব আপাতত স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছি।’