রাজশাহীতে সপ্তসতী ও আশীর্বাদ সংঘের সরস্বতীপূজার মণ্ডপে ভাঙচুর ও সাউন্ডবক্স ভেঙে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে নগরীর ফুদকিপাড়া এলাকার মন্নুজান স্কুল মাঠে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহীতে সরস্বতীপূজার একটি মণ্ডপে ভাঙচুর ও সাউন্ডবক্স ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের ফুদকিপাড়া এলাকায় একটি পূজামণ্ডপে স্থানীয় কিছু যুবক এ হামলা চালান। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ হলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
এ ঘটনার পর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নগরের বোয়ালিয়া থানা ঘেরাও করে বিচার দাবি করেন। পরে রাতেই হিন্দু বৌদ্ধ কল্যাণ ফ্রন্টের রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার সাহা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ক্ষুব্ধ সনাতনীরা মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন।
লিখিত অভিযোগে হামলাকারী হিসেবে শান্ত (৩৫), সানোয়ার (৩০), শাকিল (২৫), জীবন (৩০), আকাশ (৩০), দীপ্ত (৩০), শফিক (৩৫), আলো (২৬), সুইট (২৬) ও শিশির (৩০) নামের ১০ জন যুবকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের সবার বাড়ি পার্শ্ববর্তী বড়কুঠিপাড়া মহল্লায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে হামলার সময় এক ব্যক্তি ফেসবুকে লাইভ করতে শুরু করেন। এ সময় তিনি হামলাকারী হিসেবে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের কথা বলেন। তবে লিখিত অভিযোগে কারও বাবার নাম বা পরিচয় সুনির্দিষ্ট না থাকায় অভিযোগের ব্যাপারে কারও সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘ফুদকিপাড়া এলাকার মন্নুজান স্কুল মাঠে সপ্তসতী ও আশীর্বাদ সংঘের উদ্যোগে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। রাতে সনাতনী যুবকেরা গানবাজনার সঙ্গে সেখানে নাচানাচি করছিল। তখন হামলাকারী যুবকেরা তাঁদের সঙ্গে এসে নাচানাচি শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁরা অতর্কিতভাবে লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে এবং প্যান্ডেল ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা মেয়েদেরও মারধর করে। পরে টহল পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে তারা গালাগাল ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।’
এ ঘটনায় প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। তবে কেন বা কী কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়নি।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘সকালেই প্রতিমা বিসর্জনের কথা ছিল। সকাল পর্যন্ত পুলিশও ছিল। কিন্তু তারা নাচগান করছিল। তখন রাতে ওই ঘটনাটা ঘটে গেছে। তবে প্রতিমা ভাঙচুর হয়নি। শুধু প্যান্ডেল আর সাউন্ডবক্স উল্টিয়ে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে আমরা একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।’
তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।