প্রতিনিধি নোয়াখালী
নোয়াখালী জেলার মানচিত্র |
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ দলটির অন্তত সাত নেতা-কর্মী হামলায় আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে হরণী ইউনিয়নের বয়াচরসংলগ্ন সীমানা নিয়ে বিরোধপূর্ণ এলাকা তেগাছিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হরণী ইউনিয়নের বয়াচরসংলগ্ন তেগাছিয়া বাজারের সীমানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুরের রামগতি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। দুই উপজেলার বাসিন্দারাই ওই এলাকাটি নিজেদের উপজেলার অংশ বলে দাবি করে আসছেন। গতকাল সন্ধ্যায় হরণী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান দোলন নিজ দল এবং স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বুদ্ধ করতে বিরোধপূর্ণ তেগাছিয়া বাজারে যান।
গতকাল সন্ধ্যা আনুমানিক সাতটার দিকে তেগাছিয়া বাজারে জড়ো হওয়া স্থানীয় লোকজনের উদ্দেশে বক্তব্য দেন আক্তারুজ্জামান দোলন। তাঁর বক্তব্য চলার সময় ওই এলাকাটিকে তিনি হাতিয়া থানার অন্তর্গত বলে দাবি করেন। সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে হইচই শুরু হয়। একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় রামগতি এলাকার একদল লোক অতর্কিতভাবে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের ওপর হামলা চালান। হামলায় বিএনপির নেতা আক্তারুজ্জামান (৪৯), ইমাম হাসান (৪৫), জমির উদ্দিন (৪২), মো. মিরাজ (৩৫), সবুজসহ (৩০) অন্তত ৭ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আক্তারুজ্জামান, জমির উদ্দিন ও মিরাজকে রাতেই নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রসঙ্গে বিএনপির নেতা আক্তারুজ্জামান বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে ভোটারদের সচেতন করতে তাঁরা হাতিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে হরণী ইউনিয়নের বয়ারচরের তেগাছিয়া বাজার, টাংকির বাজার এলাকার মাইকিং ও সচেতনতামূলক বৈঠক করেছেন। গতকাল এমন একটি সমাবেশ করার জন্য তেগাছিয়া বাজারে গেলে রামগতি এলাকার ‘একটি সন্ত্রাসী বাহিনী’ তাঁদের ওপর হামলা চালান।
হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন হাতিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে তিনিও তেগাছিয়া বাজারে গিয়েছিলেন। বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় এলাকাটিকে হাতিয়া উপজেলার অংশ বলে দাবি করার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায় তাঁরা। তখন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে নেতাদের উদ্ধার করেন। পরে রামগতি থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।