প্রতিনিধি নোয়াখালী

আগুন জ্বলছে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়ির একটি ঘরে। আজ দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গ্রামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর চলার সময় ওবায়দুল কাদের কিংবা তাঁর ভাইদের পরিবারের কেউ বাড়িতে ছিলেন না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বেলা একটার দিকে কয়েক শ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা লাঠিসোঁটা নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার বড় রাজাপুর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা এ সময় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জার দ্বিতল পাকা ভবনে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালান।

এর আগে গত ৫ আগস্ট একই বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিলেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ওই ঘটনার পর কিছুদিন আগে আবদুল কাদের মির্জা তাঁর স্বজনদের মাধ্যমে বাড়িতে সংস্কারকাজ করিয়েছিলেন। সংস্কারকাজের পর আজ দ্বিতীয় দফায় ভাঙচুর চালানো হলো। ‌তবে হামলা ও ভাঙচুরের সময় আবদুল কাদের মির্জা কিংবা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে ছিলেন না।

হামলার সময় উপস্থিত লোকজন জানান, গ্রামের বাড়িতে ওবায়দুল কাদের ও তাঁর ভাই আবদুল কাদের মির্জার বাড়ির (মূল বাড়ি) পাশে পৃথক স্থানে আরেক ভাই শাহাদাত হোসেনের পাকা একতলা বাসভবন রয়েছে। বেলা একটা থেকে ওই দুই বাড়িতে ভাঙচুর শুরু হয়ে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চলে। এ সময় হামলাকারীদের অনেকে লেপ, তোশকসহ বাড়ির ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়ে যান। এরপর হামলাকারীরা একটি বাড়ি থেকে আসবাব বের করে একটি পুরোনো গাড়ির ওপর রেখে তাতে আগুন দেন। পাশাপাশি আগুন দেওয়া হয় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনের বাসভবনের সামনের একটি টিনের ঘরেও।

ঘরের মালামাল জড়ো করে তাতে আগুন দেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আজ দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জের অসংখ্য মানুষ ওবায়দুল কাদের ও তাঁর ভাই কাদের মির্জার লোকজনের হাতে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব কারণে তাঁদের প্রতি যে ক্ষোভ জমেছিল, আজকের হামলা ও ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এই হামলা ও ভাঙচুরে সর্বস্তরের ছাত্র–জনতা অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও যদি কোনো সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে ফ্যাসিস্ট আচরণ করে, তবে তাদের পরিণতিও একই রকম হবে।

বিক্ষুব্ধ জনতা ওবায়দুল কাদেরের বাড়ি ঘিরে রয়েছেন। চালাচ্ছেন ভাঙচুর। আজ দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো. ফৌয়জুল ইসলাম বেলা দেড়টায় বলেন, তিনি দাপ্তরিক কাজে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রয়েছেন। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতার হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।