প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
রাজশাহী নগরের বিমানবন্দর থানার সামনে যুবদলের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী-নওগাঁ সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহীর পবায় এক সপ্তাহ আগে যুবদলের সাবেক এক নেতার বাড়িতে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই নেতার বাবা মারা যান। ওই ঘটনায় হওয়া মামলার আসামিদের পুলিশের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, এমন একটি ভিডিও দেখার পর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন যুবদলের নেতা-কর্মীরা।
আজ বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) বিমানবন্দর থানার সামনে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে নেতা-কর্মীরা পরে মহাসড়ক ছেড়ে দেন।
এর আগে ১৪ জানুয়ারি মধ্যরাতে পবার ভুগরইল গ্রামে যুবদল নেতা সালাহউদ্দিন মিন্টুর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। দরজা ভেদ করে ঢুকে যাওয়া একটি গুলিতে আহত হন সালাহউদ্দিনের বাবা মো. আলাউদ্দিন। পরদিন দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নগরের শাহ মখদুম থানায় ৩৭ জনের নামে মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন এজাহারভুক্ত আসামি মো. আবদুল্লাহ (২৬) ও মো. ওবায়দুল (২২)।
বিমানবন্দর থানার সামনে বিক্ষোভকারীরা জানান, ১৪ জানুয়ারি রাতে একটি আপস মীমাংসার জন্য দুই পক্ষ বিমানবন্দর থানায় বসেছিল। সেখানে ছিলেন যুবদল নেতা সালাহউদ্দিনও। রাতে তিনি থানা থেকে যাওয়ার পরই তাঁর বাড়িতে গুলি করা হয়। হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ওই রাতে আপস মীমাংসার জন্য থানায় এসেছিলেন। ঘটনার ১০ মিনিট আগেও কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে থানার সামনে তাঁদের আলাপ করতে দেখা যায়।
বিক্ষোভে ছিলেন জেলা যুবদলের সদস্য ইফতেখারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনই বলছি না যে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে গিয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। তবে আমরা ভিডিও পেয়েছি। তাতে দেখা যাচ্ছে, থানার সামনে সাদাপোশাকে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সন্ত্রাসীরা কথা বলছে। এ থেকে বোঝা যায়, পুলিশ তাদের প্রত্যেককে চেনে। বিমানবন্দর থানা-পুলিশ যেন শাহ মখদুম থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করে। সেই দাবি নিয়ে আমরা থানার সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেছিলাম।’
বিক্ষোভের সময় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে থানার সামনে দিয়ে এক লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে নেতা-কর্মীরা সন্ধ্যা থেকে ভুগরইল বটতলার মোড়ে জড়ো হন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা বিমানবন্দর থানার সামনে যান। পরে ওসি ফারুক হোসেন বেরিয়ে এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন।
সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের ভিডিও থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘তারা দুই পক্ষ সেদিন রাতে আপস মীমাংসার জন্য বসেছিল। সুন্দরভাবে আপস মীমাংসা হয়ে যাওয়ার পর তারা চলে যায়। তারপর কে কী ঘটনা ঘটিয়েছে, তার জন্য পুলিশের ওপর দায় আসতে পারে না। তবুও বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ ১৩০ থেকে ১৪০ জন ব্যক্তি থানার সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। আমি তাঁদের বুঝিয়ে বলেছি, মামলার তদন্ত হচ্ছে শাহ মখদুম থানায়। তাই এই থানার সামনে বিক্ষোভ করা যুক্তিসংগত নয়। আমি তাঁদের আরও বলেছি, তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো সহায়তা চাইলে অবশ্যই করা হবে। এর ১০-১৫ মিনিট পর তাঁরা চলে যান।’