প্রতিনিধি ঈশ্বরদী
![]() |
ঈশ্বরদী উপজেলার দিয়ার সাহাপুর এলাকায় শীত থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা পোহাচ্ছেন কয়েকজন তরুণ। ঠাণ্ডার কারণে তাদের পাশে এসে বসেছে একটি কুকুর ছানা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
পাবনার ঈশ্বরদীতে বাড়ছে শীত। হাড় কাঁপানো হিমেল হাওয়ার দাপটে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে দিনমজুর, রিকশাচালক এবং খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
আজ শুক্রবার সকালে ঈশ্বরদী আবহাওয়া কার্যালয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয় আবহাওয়া কার্যালয় জানায়, এর আগের দিন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ক্রমেই কমার পাশাপাশি তীব্র হিমেল হাওয়ার কারণে শীতের অনুভূতি কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত তিন-চার দিন থেকে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার পরিমাণ কিছুটা কমলেও হিম হাওয়ায় নাকাল তাঁরা। দিনের বেলাও দেখা নেই সূর্যের। ঠান্ডা বাতাসের কারণে মানুষজন কাজে বের হতে দ্বিধাগ্রস্ত। বিশেষ করে সন্ধ্যা নামার পর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
![]() |
উপজেলার চরকুড়ুলিয়া পূর্ব পাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে শীতের মধ্যে হেঁটে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
উপজেলা সদরের ভূতেরগাড়ি এলাকার রিকশাচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘গত তিন-চার দিন ধরে প্রচণ্ড শীত পড়ছে। বাতাস এত বেশি যে চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে, যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না। কাজ না করতে পারলে সংসার চালানোই মুশকিল হয়ে পড়বে।’
এদিকে শহরের রাস্তাঘাটেও শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কমে গেছে। যাঁরা কাজে বের হচ্ছেন, তাঁরাও সময়ের আগেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে গরম পোশাকের অভাবে বাড়িতে অবস্থান করছেন।
রেলগেট এলাকায় দিনমজুর কাশেম মন্ডল বলেন, ‘শীত এমন যে হাত-পা জমে যাচ্ছে। সকাল থেকে কাজের জন্য বের হই, কিন্তু কাজ পাই না। শীতে কেউ কাজে ডাকছে না। এই ঠান্ডায় খেতে কাজ করা বা কোনো ভারী কাজ করা একেবারেই কঠিন। আমাদের মতো গরিব মানুষের শীত মানে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই।’
ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক বলেন, ‘শুক্রবার সকালে উপজেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকালের তুলনায় তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে শীতের প্রকোপের মূল কারণ হিমেল বাতাস। এটি তাপমাত্রার চেয়ে বেশি শীত অনুভব করাচ্ছে।’
অন্যদিকে শীতের এ পরিস্থিতিতে দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ এবং সহায়তার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
![]() |
লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে শীতের মধ্যে স্কুল শেষে বাড়ির পথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |