প্রতিনিধি রাজশাহী
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. পিএম সফিকুল ইসলাম | ছবি: সংগৃহীত |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. পিএম সফিকুল ইসলাম গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করে আটকে রেখে ৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বিকালে নগরীর সাধুর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ জানিয়েছেন, 'অধ্যাপক সফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।'
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অধ্যাপক সফিকুল ইসলাম নগরীর সাধুর মোড়ের একটি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে তাকে মাঠে নিয়ে মারধর করেন। পরে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ বিকাল ৫টার দিকে তাকে উদ্ধার করে।
পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও আক্রমণের সময় স্থানীয় লোকজন ‘আওয়ামী লীগের পুলিশ’ বলে স্লোগান দেয়। এ সময় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে এসব দৃশ্য দেখা যায়।
পুলিশ নিয়ে যাওয়ার সময় পিএম সফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্দোলনের সময় আমি শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ছিলাম। আমি কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত নই। আমার নামে কোনো মামলাও নেই।’ তিনি জানান, 'স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও পাড়ার ছেলেরা তাকে আটকে রেখেছিলেন। তার কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল।'
সৈকত নামে রাজশাহী নগরীর স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ধরে রেখেছি সাধুর মোড়ে, মিডিয়া আসলে পুলিশের হাতে তুলে দেব।'
আরএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক অধ্যাপককে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করেছি। তার নামে কোনো অভিযোগ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।'
অধ্যাপক সফিকুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন নীল প্যানেলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সর্বশেষ তিনি নেত্রকোনা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, তবে গত সেপ্টেম্বরে তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারির নির্বাচনে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন কিন্তু পাননি।