নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যে সময়ের কথা বলেছেন, তা বিএনপির কাছে যৌক্তিক মনে হয়নি। এ কথা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু তিনি তা দেননি। এটা আমাদের হতাশ করেছে।’

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। গতকাল বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে গেছে। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতি দেখছি না।’

নির্বাচনের সময়ের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ ও তাঁর প্রেস সচিবের বক্তব্যকে সাংঘর্ষিক বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘তাঁদের দেওয়া বক্তব্য কোনটা সঠিক, আমরা বুঝতে পারছি না।’

এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবেও জানানো হয়। তাতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপদেষ্টার ভাষণের যে ব্যাখ্যা দেন, তা নিয়েও সভায় আলোচনা হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। তাঁর বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রাখা হয় নি।

স্থায়ী কমিটির সভা থেকে এ-ও বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনুস নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সীমা ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের প্রথম অংশে অনুষ্ঠানের কথা বলেন, যা একেবারেই অস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট কোন সময় উল্লেখ নেই। অথচ তাঁর প্রেস সচিব বলেন যে, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা পরস্পর বিরোধী। সভা মনে করে, এই ধরনের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আরো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির মহাসচিব জানিয়েছেন, তাঁদের দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি মনে করে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। জনগণ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত।

গত রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, বীর বিক্রম, এ জেড এম জাহিদ হোসেন।