প্রতিনিধি লালমনিরহাট

রাসেদ হোসেন | ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি রাসেদ হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক কৃষকের জমি দখল ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা এরই মধ্যে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য এবং জেলা যুবদলের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।

গত ১১ ডিসেম্বর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটিকে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কৃষক সাইদুল ইসলাম। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত ১৯ নভেম্বর তার ভোগ দখলীয় ৫৫ শতক সরিষা ক্ষেত নষ্ট করে জবর দখল করেছেন রাসেদ। এদিন বেশকিছু লোক নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে জমি দখলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

একই ইউনিয়নের ১  ওয়ার্ডের কৃষক নুরুল ইসলামের মালিকানাধীন ৫৪ শতাংশ জমি গত ১০ ডিসেম্বর রাসেদ দখল করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। দখলের সময় ওই ইউনিয়নের যুবলীগের সদস্য ভাই মুকুল হোসেনকে সঙ্গে নেন তিনি (রাসেদ)।

নুরুল ইসলামও উপজেলা যুবদলের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার ৪ দিনের মাথায় ১৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে বুড়িমারী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলামের নিকট ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি রাসেদের নির্দেশে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেন ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সম্পাদক সহিদুল ইসলাম ও যুবদল কর্মী ডালিম। ‘টাকা হাতে নেই’ জানালে রাসেদ তাকে হুমকি দিয়ে ‘বাঁচতে চাইলে টাকা’ দিয়ে দিতে বলে। সেইসঙ্গে এই ঘটনা ‘কাউকে জানালে অবস্থা খারাপ করে দেওয়ার’ও হুমকি দেওয়া হয়।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর বুড়িমারী স্থলবন্দরের কাস্টমস অফিসে চাঁদা দাবি করেন রাসেদের (ছোটভাই) যুবলীগকর্মী মুকুল হোসেন। এসময় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বুড়িমারী ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইবনে সুমন চাঁদা নিতে নিষেধ করেন। এ ঘটনায় সুমনের দেখা করে রাসেদ অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে ও তার কথা মতো না চললে ‘মারাত্মক খেসারত দিতে হবে’ বলে হুমকি দেন। ঘটনার উল্লেখ করে গত ২ ডিসেম্বর উপজেলা যুবদলের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইবনে সুমন।

অপরদিকে জমি দখলের তথ্য জানতে গেলে যুবদল সভাপতির পরিচয় দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন রাসেদের সহযোগী সাত থেকে আট জন যুবক। এ ঘটনা উল্লেখ করে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে সংবাদকর্মীরাও লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

এসব অভিযোগ তদন্তে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব গত ১৪ নভেম্বর ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম করে দেন। ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা ও প্রমাণ পেয়েছেন উল্লেখ করে রাসেদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মত দিয়েছেন তদন্ত কমিটি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বুড়িমারী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রাসেদ হোসেন বলেন, ‘এসব সম্পর্কে কিছু জানি না। আপনারা মাঠ পর্যায়ে তথ্য নেন। দেখেন জমি দখল করেছি কিনা। এসব ভুয়া তথ্য।’

পাটগ্রাম উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রাবিউল ইসলাম বলেন, ‘রাসেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি সত্যতা পেয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। এসব তথ্য কেন্দ্র ও জেলা যুবদলের নিকট পাঠানো হয়েছে। উনারা এখন কী পদক্ষেপ নেন, সেটার অপেক্ষায়।’