প্রতিনিধি কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে পুলিশ সুপারকে বাধা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খানকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রবেশে বাধা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ। শুক্রবার রাত ৮টায় তিনি প্রবেশ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তাকে বাধা দেওয়া হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক পক্ষ চলমান ‘ভারতীয় আগ্রসনবিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়িভোজ’-এর বিরোধিতা করে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খানকে নিয়ে একটি গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসে। গাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন এসে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করাতে চান। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। দুই পক্ষের হট্টগোলে পুলিশ সুপার কিছুক্ষণ মূল ফটকে অপেক্ষা করেন। পরে ফিরে যান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসা হয়নি। তাই আজকে এক জায়গা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম।’
তবে সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘আমরা ওনাকে (এসপি) ইনভাইট করেছিলাম। কিন্তু উনি যে আসবেন বিষয়টি বিকাল পর্যন্ত নিশ্চিত ছিল না। স্যারের ব্যস্ততার কারণে উনি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটু আলোচনা করতে এসেছিলেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত মো. হান্নান রহিম খিচুড়িভোজ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘যেখানে আন্দোলনে আহতরা এখনও হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে, দাউদকান্দিতে আজকেও একজন মারা গিয়েছে; সেখানে খিচুড়িভোজ, নাচ-গান এসব তো একপ্রকার তাদের প্রতি মশকরা করার মতো। আহত অনেকেই চাচ্ছেন তাদের যেন যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থাটা অন্তত করে দেওয়া হয়। এমন একটা সিচুয়েশনে এরকম একটা আয়োজনের কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। আর সেই আয়োজনে এসেছেন পুলিশ সুপার। তাই আমরা ঢুকতে দিইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি টাকার যে জোগান সেটা একজন সাবেক কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে এসেছে। তা ছাড়া কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল অনেকটা ইচ্ছাকৃতভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করার জন্য আন্দোলনের এই পর্যায়ে এমন একটি আয়োজনের অর্থায়ন করেছেন। তাই তাকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘পুলিশ সুপার যে আসবেন আমরা জানি না। আমাদের কাউকে জানানোও হয়নি। তাকে যে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে সেটাও আমাদের জানানো হয়নি।’