নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি ‘আত্মঘাতী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’ বন্ধেরও আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পোস্টে ফরহাদ মজহার বলেন, 'ধর্ম ও জাতিসত্তার ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকার রক্ষা করতে হবে।'

চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক’ উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, 'হিন্দু মানেই দিল্লির দালাল বা বিজেপির এজেন্ট—এ ধরনের ট্যাগিং বন্ধ করতে হবে। এসব ঘৃণাপূর্ণ ধারণা আমাদের সমাজে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করে।' 

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর সঙ্গে গবেষক ফরহাদ মজহার | পুরোনো ছবি

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের আদালত চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। এর আগে গত সোমবার ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চিন্ময় দাশ গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং আট দফা দাবিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছিলেন। এসব দাবি আদায়ে তার নেতৃত্বে চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়।

চিন্ময়ের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে ফরহাদ মজহার বলেন, 'জুলাই বিপ্লব আমাদের চেতনাগত রূপান্তর ঘটিয়েছে। চিন্ময়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা জাতির জন্য মূল্যবান বার্তা। এই রূপান্তর আমাদের ঐক্যের ভিত্তি হতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'ধর্ম ও জাতিসত্তা নির্বিশেষে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের প্রধান কাজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ক্ষোভ ও দুঃখ মন থেকে উপলব্ধি করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।'

চিন্ময়ের গ্রেপ্তার নিয়ে ফরহাদ মজহার অভিযোগ করেন, 'সরকার ও প্রশাসনের মধ্যে গণবিরোধী চক্র কাজ করছে। এই চক্রই তাকে সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছে। অবিলম্বে চিন্ময় দাশকে মুক্তি দিতে হবে।'

তিনি জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'জুলাই বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার সময় এসেছে।'

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, 'ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা বন্ধ করতে হবে। দেশের জনগণের প্রতি আমাদের আস্থা রাখতে হবে এবং তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভকে আন্তরিকভাবে বুঝতে হবে।'

চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।