দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে রূপপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের উভয় ইউনিটের স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি শিগগিরই এসে পৌঁছাবে। সম্প্রতি রাশিয়া থেকে সরঞ্জামগুলো নিয়ে বাংলাদেশে রওনা দেওয়া হয়েছে। এই যন্ত্রপাতিগুলো তৈরি করেছে রসাটমের অধীনে একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান, যা স্পেশালাইজড সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ইনস্ট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (এসএনআইআইপি)।

মঙ্গলবার বিকেলে বেসরকারি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, প্রথম ইউনিটের জন্য ১৫টি এবং দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য ৮টি রেডিয়েশন মনিটরিং সিস্টেম ইউনিট (এআরএমএস) পরিবহন করা হয়েছে। প্রকল্পের বিশেষ চাহিদা অনুযায়ী এই সিস্টেমগুলো তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ৩০০টি ডোজিমিটার এবং ফিল্টার হোল্ডারের একটি ব্যাচ প্রকল্প সাইটে আসবে।

এসএনআইআইপির প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার কার্ৎসেভ বলেন, "স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য নির্ধারিত যন্ত্রপাতিগুলো একটি প্যাকেজে রূপপুর সাইটে ডেলিভারি করা হচ্ছে। এটি প্রকল্পে প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ডোজিমিটার আসার আগেই আমরা মূল যন্ত্রপাতি পেয়ে গেছি। আমরা আনন্দিত যে, প্রকল্পের সূচনার জন্য অত্যাবশ্যকীয় জিনিসগুলো শিগগিরই হাতে পাচ্ছি।"

এছাড়া, এসএনআইআইপি ইতিমধ্যে অব্যাহত রেডিয়েশন পর্যবেক্ষণের জন্য যন্ত্রপাতি, সনাক্তকরণ ইউনিট ও অন্যান্য ডিভাইস পাঠিয়েছে। ব্যক্তিগত ডোজিমেট্রিক মনিটরিং সিস্টেমের জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারও প্রকল্প সাইটে পৌঁছেছে। এই সিস্টেমটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত ডোজিমিটার থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে।

অন্য যেসব প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রপাতি, রেডিয়েশন দূষণ পর্যবেক্ষণের যন্ত্র, ল্যাবরেটরি সরঞ্জাম ইত্যাদি। স্বয়ংক্রিয় রেডিয়েশন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্ধারিত বস্তুর রেডিয়েশন পরিমাপক তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ এবং প্রদর্শন করা হয়। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পারমাণবিক জ্বালানিচক্র প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিজ্ঞান ও গবেষণা কেন্দ্রে এই সিস্টেমগুলো ব্যবহার হয়।

রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রকল্পটিতে দুটি ইউনিট থাকবে এবং মোট উৎপাদন সক্ষমতা হবে ২,৪০০ মেগাওয়াট। প্রতিটি ইউনিটে স্থাপন করা হবে থ্রি+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর–১২০০ রিয়্যাক্টর। প্রকল্পের নকশা ও বাস্তবায়ন করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত রসাটমের প্রকৌশল শাখা।