ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে লালন আনন্দধামে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় লালন আনন্দধামে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যায় আনন্দধামের প্রতিষ্ঠাতা সদরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ জাহিদ হাসান (৪২) লিখিত অভিযোগ দেন, যা নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকছেদুর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হামলার সত্যতা পাওয়া গেছে।”
বুধবার রাতে তিনি আরও বলেন, “অভিযোগটি মামলার এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।” এই ঘটনার তদন্তের জন্য ভাঙ্গা থানার এসআই অমিয় চক্রবর্তীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে ৫১ শতাংশ জমির উপর লালন আনন্দধাম প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ জাহিদ হাসান। সেখানে নিয়মিত পাঠচক্র, লোকসাহিত্য নিয়ে গবেষণা, লোকগান ও লালন সংগীতসহ রবীন্দ্র-নজরুল-জসীমউদ্দীনের জন্মজয়ন্তী উদযাপনসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন।
রোববার রাত তিনটার দিকে দুষ্কৃতকারীরা আনন্দধামে হামলা চালায় এবং লালন ফকিরের ছবি, মূল্যবান বই ও জার্নাল, একতারা, দোতারা, বায়া, জুড়ি, গিটারসহ বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া তারা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্যও ভাঙচুর করে।
ভাঙ্গা থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে সৈয়দ জাহিদ হাসান উল্লেখ করেন, “আমি ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি লালন আনন্দধাম প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এলাকার কিছু উচ্ছৃঙ্খল, বখাটে ও মৌলবাদী মনোভাবাপন্ন তরুণ আনন্দধামের বিরোধিতা করতে শুরু করে। তারা আনন্দধাম উৎখাত এবং আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য নানা হুমকি দিয়ে আসছিল।”
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, “পুলিশ বিষয়টি নজরে রেখেছে। আমি ভাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি, প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য। হামলার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, হামলাকারীরা যে-ই হোক।”