নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর | ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ৩১.৯ মিলিয়ন ডলার আদায়ের দাবিতে বাংলাদেশের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। গত বৃহস্পতিবার এই আদেশ জারি করেন মার্কিন জেলা জজ কার্ল জে নিকোলস। স্মিথ কোজেনারেশন নামে মার্কিন কোম্পানিটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাওনা আদায়ে তাদের জবানবন্দি নিতে এই আবেদন করে।

স্মিথ কোজেনারেশনের অভিযোগ, সালিশি জরিমানার টাকা আদায়ে তাদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সালেহউদ্দিন ও মনসুরকে আদালতে হাজির করা জরুরি। ২০০৬ সালে দায়ের করা এই মামলায় এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকার দ্রুত আপিল করেছে। তারা দাবি করে, সালেহউদ্দিন ও মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি নির্দেশের এখতিয়ার মার্কিন আদালতের নেই। এছাড়া এই দুজন ব্যক্তি বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তার মর্যাদা রাখেন, ফলে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফৌজদারি ও দেওয়ানী প্রক্রিয়া থেকে সুরক্ষা দেওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনি সংবাদমাধ্যম ল৩৬০-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, সালেহউদ্দিন ও মনসুরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের পত্রিকা দ্য ডেইলি স্টার, তবে তাদের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথেও যোগাযোগ করা হলেও তারাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

স্মিথ কোজেনারেশন জানায়, সালেহউদ্দিন ও মনসুর বর্তমানে ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন, এবং তাদের জবানবন্দি নেওয়ার জন্য এটাই সম্ভবত শেষ সুযোগ। কোম্পানিটি বলছে, বাংলাদেশ সরকার বারবার আদালতের নোটিশ উপেক্ষা করে আসছে।

এ বিরোধের শুরু ১৯৯৭ সালে, যখন স্মিথ কোজেনারেশন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি ভাসমান বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের জন্য বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে। কিন্তু ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রকল্পটি বাতিল করে এবং কোম্পানিটিকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেয়নি। এরপর স্মিথ কোজেনারেশন সালিশি প্রক্রিয়ার জন্য ২০০২ ও ২০০৩ সালে লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে এবং আদালত তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডিসি আদালতও স্মিথ কোজেনারেশনের পক্ষে রায় দেয়।

স্মিথ কোজেনারেশনের আইনজীবী জানায়, সুদ ও অন্যান্য খরচ যোগ করে বাংলাদেশের কাছে কোম্পানিটির পাওনা বর্তমানে ৩১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।