খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। লাঠিসোঁটা হাতে একপক্ষের অবস্থান। ০১ অক্টোবর, বিকেলে | ছবি: ভিডিও থেকে

প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

ঘটনার পর পাহাড়ি ও বাঙালিরা খাগড়াছড়ি সদরে মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং পৃথক মিছিল বের করে। মহাজনপাড়ার কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর এবং একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, যা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান জানান, "শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং পরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। 

সোহেল রানা প্রতিষ্ঠানটির বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। ২০২১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছিল, যেখানে তিনি কিছুদিন কারাগারে ছিলেন।

মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের শাপলা চত্বরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অবস্থান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এ ঘটনার পর ছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করে এবং সোহেল রানাকে অধ্যক্ষের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে পাহাড়ি তরুণেরা তাঁকে মারতে শুরু করে। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা জানান, "হাসপাতালে আনার আগেই সোহেল রানা মারা গেছেন। ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা খণ্ড খণ্ড পক্ষে বিভক্ত হয়ে মহড়া দিতে শুরু করে এবং দুই পক্ষের মধ্যে স্লোগান দেওয়া হয়।"

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, "উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে গিয়ে তিনিও মার খেয়েছেন।"

উল্লেখ্য, ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে মো. মামুন নামের এক যুবককে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, যার ফলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। ১৯ সেপ্টেম্বর দীঘিনালায় সংঘর্ষে কয়েকজন নিহত হন এবং রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল, যা পরে তুলে নেওয়া হয়। এসব ঘটনায় দুই জেলায় পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে।