প্রতিনিধি রাজশাহী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ডিসিপ্লিনের শ্রেণিকক্ষ উদ্ধার করা তামা। রোববার রাতে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শ্রেণিকক্ষ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত প্রায় ১৪৭ কেজি তামা উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার রাতে মৃৎশিল্প ডিসিপ্লিনের শ্রেণিকক্ষের একটি তালাবদ্ধ বাক্স থেকে শিক্ষার্থীরা এসব তামা বের করেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, ভাস্কর্য নির্মাণ কমিটির শিক্ষকেরা এগুলো লুকিয়ে রেখেছিলেন। তবে কমিটির দুই সদস্য জানান, তামাগুলো অবশিষ্ট ছিল। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও নির্দেশনা না পাওয়ায় এগুলো সেখানে রাখা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই দিন সন্ধ্যায় মৃৎশিল্প ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করছিলেন। একপর্যায়ে তারা তালাবদ্ধ বাক্সটির দিকে নজর দেন এবং ভেতরে কী আছে তা জানতে চাইলে কোনো উত্তর না পেয়ে তাঁরা বাক্সটি ভেঙে ফেলেন। পরে বাক্সের ভেতরে চারটি বস্তায় এসব তামা পাওয়া যায়।
বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের ভাস্কর্য নির্মাণ কমিটির সদস্য অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র সূতার জানান, "কাজ শেষে কিছু তামা অবশিষ্ট ছিল। পরবর্তী সময়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি এবং ওই কমিটিকে লিখিতভাবে জানাই যে, আমাদের কাছে আনুমানিক ১৪৫ কেজি তামা অবশিষ্ট আছে। তবে তদন্ত কমিটি এগুলো জমা দেওয়ার কোনো নির্দেশনা না দেওয়ায় সেগুলো সেখানে রাখা হয়েছিল।"
কমিটির অপর সদস্য অধ্যাপক মো. ফজলুল করিম বলেন, "এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো হিসাব নেই। আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী ও শামসুজ্জোহারের ভাস্কর্য নির্মাণের সময় তামা ক্রয় করেছিলাম। বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের ভাস্কর্যের অবশিষ্ট তামার তথ্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তবে কাজ শেষ হওয়ার পর কিছু অবশিষ্ট ছিল, সেগুলো জমা দেওয়ার নির্দেশনা না থাকায় এখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমান জানান, "বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে ব্যবহারের জন্য ৮০০ কেজির মতো তামা আনা হয়েছিল, কিন্তু সেখানে প্রায় ৫০০ কেজি ব্যবহার করা হয়েছে। বাকি তামা কোথায় ব্যবহার হয়েছে কিংবা কোথায় রাখা হয়েছে, তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখানে ১৪৭ কেজির মতো তামার সন্ধান পাওয়া গেছে। স্মৃতিফলক নির্মাণ কমিটির যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে দুজনের বক্তব্যে অসংগতি রয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সঠিক তথ্য বের করা হবে।"