পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক
হান কাং | ফাইল ছবি |
২০২৪ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রখ্যাত লেখক হান ক্যাং। বৃহস্পতিবার সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছে। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
সুইডিশ অ্যাকাডেমি জানিয়েছে, হান ক্যাংকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে তার গদ্যের জন্য, যা মানব জীবনের দুর্বলতা এবং ঐতিহাসিক ট্রমাগুলোর প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়।
১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গাংজু শহরে জন্ম নেওয়া হান ক্যাং ৯ বছর বয়সে তার পরিবার নিয়ে সিউলে চলে আসেন। সাহিত্যিক পরিবারের পটভূমিতে লেখালেখির প্রতি তার আগ্রহ বাড়ে। তার বাবা একজন পরিচিত উপন্যাসিক ছিলেন। সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি চিত্রকলা ও সঙ্গীতেও পারদর্শী, যা তার লেখায় প্রকাশ পায়।
হান ক্যাং আগে থেকেই আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত, বিশেষ করে তার উপন্যাস 'দ্য ভেজিটারিয়ান' এর জন্য, যা ২০১৬ সালে ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ জিতে। তার লেখায় মানবিক দুর্দশা, যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং স্মৃতির জটিলতা খুব সংবেদনশীলভাবে ফুটে উঠেছে।
হান ক্যাংয়ের আন্তর্জাতিক সাফল্য এসেছে উপন্যাস ‘দ্য ভেজিটারিয়ান’ এর মাধ্যমে, যা তিনটি অংশে লেখা। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তার কাজের বৈশিষ্ট্য হলো ব্যথার দুই রকম প্রকাশ, মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণার মধ্যে একটি সাদৃশ্য, যা প্রাচ্য চিন্তার সঙ্গে সম্পর্কিত।
২০২৩ সালের পুরস্কারটি নরওয়ের লেখক ও নাট্যকার জন ফসেকে দেওয়া হয়েছিল, যিনি তার উদ্ভাবনী নাটক ও গদ্যের জন্য সম্মানিত হন।
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে পুরুষদের প্রাধান্য ছিল দীর্ঘদিন। মাত্র ১৭ জন নারী এই সম্মান পেয়েছেন, সর্বশেষ নারী বিজয়ী ছিলেন ফ্রান্সের আনি আর্নো, যিনি ২০২২ সালে এই পুরস্কার জেতেন।
প্রথা অনুযায়ী অক্টোবরের প্রথম সোমবার চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এভাবে ৭ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। এদিন চিকিৎসাশাস্ত্রে ‘মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য’ যৌথভাবে দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকানকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স জানায়, জন জে. হপফিল্ড ও জিওফ্রে ই. হিন্টনকে ‘কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের সাথে মেশিন লার্নিং সক্ষম করার জন্য’ পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। এবার রসায়নে নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী: ডেভিড বেকার, ডেমিস হ্যাসাবিস এবং জন এম. জাম্পার।
সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর ৫ বছর পর ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করা হয় রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। তার রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রতি বছর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর দিবস ১০ ডিসেম্বর বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও অর্থ দেওয়া হয়। প্রত্যেক বিভাগের বিজয়ীদের একটি স্বর্ণপদক, প্রশংসাপত্র এবং বর্তমানে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা দেওয়া হয়।