প্রতিনিধি রাজশাহী
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পদ্মা এক্সপ্রেস | ছবি: ফেসবুক |
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে বর্তমানে নানা সংকটে জর্জরিত। আশাজনক নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও তেমন সাফল্য আসেনি। বারবার হোঁচট খেয়ে একের পর এক ট্রেন ও স্টেশন বন্ধ করতে হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ২৩টি ট্রেন এবং ৫৪টি স্টেশন ইতোমধ্যে বন্ধ হয়েছে। যাত্রীদের ক্ষোভ থাকলেও সেগুলো পুনরায় চালুর তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ২৩টি ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। যাত্রীখাতে অতিরিক্ত লোকসান, চালক ও ইঞ্জিন সংকটসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এসব ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রীরা বলছেন, রেলসেবা স্বাভাবিক রাখতে প্রতিটি ট্রেন চালু রাখা অত্যন্ত জরুরি।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর, রেলওয়ের সহকারী প্রধান অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়ালের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ট্রেন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে গত ১৫ আগস্ট থেকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস বন্ধ রয়েছে। এছাড়া, আয় কমে যাওয়ায় চন্দনা-ভাঙ্গা কমিউটার ও উত্তরা এক্সপ্রেস এবং নাশকতা এড়াতে ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটের লোকাল-৫৬৩/৫৬৪ বন্ধ রাখা হয়েছে।
কোচ, ইঞ্জিন এবং কর্মী সংকটের কারণে বন্ধ রাখা ট্রেনগুলোর মধ্যে রয়েছে লোকাল-৫১৫, লোকাল-৫১১/৫১২, লোকাল-৫৪১/৫৪২, লোকাল-৫৯১/৫৯২, লোকাল-৪১১/৪১২, লোকাল-৪৫৩/৪৫৪, লোকাল-৪৩১/৪৩৪, লোকাল-৪৮১/৪৮২, লোকাল-৪১৫/৪১৬/৪২১/৪২২, মিশ্র-৪৫১/৪৫২, মিশ্র-৪৩২/৪৩৩, মিশ্র-৪১৩/৪১৪, উত্তরবঙ্গ মেইল এবং পার্বতীপুর কমিউটার। এছাড়াও, রংপুর ও পঞ্চগড় কমিউটার ট্রেনগুলো মেরামতের কাজ চলায় বন্ধ রয়েছে। এসব ট্রেন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং আন্তনগর ট্রেনগুলোতে চাপ আরও বেড়েছে।
এদিকে, জনবল সংকটের কারণে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ৫৪টি স্টেশনও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলে মোট ১৭৫টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে ১২১টি স্টেশন চালু থাকলেও ৫৪টি স্টেশন জনবলের অভাবে বন্ধ রয়েছে। চালু থাকা স্টেশনগুলোতেও যাত্রীদের নানা ভোগান্তির অভিযোগ রয়েছে। বন্ধ স্টেশনগুলোতে টিকিট বিক্রি না হওয়ায় যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহে নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। এতে বিনা টিকিটে যাত্রী চলাচল বাড়ছে এবং রেলওয়ের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।
এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আব্দুল আওয়াল ভূঁইয়া বলেন, "ঠিক কতটি ট্রেন বা স্টেশন বন্ধ রয়েছে, তা এখন মনে নেই। তবে বেশ কিছু বন্ধ স্টেশন চালু করা হয়েছে। তবে আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। যদিও কিছু ট্রেন বন্ধ হয়েছে, তবুও আমরা নতুন ট্রেন চালু করেছি।"