প্রতিনিধি গাজীপুর
গাজীপুর জেলার মানচিত্র |
গাজীপুর জেলা শহরের কৃপাময়ী কেন্দ্রীয় কালীমন্দিরে আলোচনা সভা ও উপহার বিতরণী অনুষ্ঠানে সোমবার দুপুরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির দুই নেতা গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উপদেষ্টা সাবেদ তালুকদার। তাঁদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন যুবদল নেতা অলিউল্লাহ তুহিন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম ওরফে রনির পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঞ্জুরুল করিম বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর সদর থানার সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বিএনপি নেতা জি এস সুরুজ আহমেদ, সিটির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান মিয়া এবং মহানগর কালীমন্দিরের সদস্যসচিব বাপ্পি দে। বেলা সোয়া ১টার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হলে অতিথিরা চলে যান।
পরে কালীমন্দিরের বাইরে রেলক্রসিং এলাকায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার কারণে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুলের অনুসারী যুবদল নেতা অলিউল্লাহ তুহিনের সঙ্গে মহানগর বিএনপির নেতা মোফাজ্জল হোসেনের অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা খন্দকার রুবেল ও রাজু সাহার মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এর জেরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে চাপাতির কোপে অলিউল্লাহ তুহিন আহত হন এবং গুলিবিদ্ধ হন শফিকুল ইসলাম ও সাবেদ তালুকদার। পরে আশপাশের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ সময় শহর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম বলেন, "আমরা চলে যাওয়ার পর কিছু হয়েছে। সেটা আমার জানা নেই। পরে সংঘর্ষের কথা শুনেছি।" তবে মহানগর বিএনপির নেতা মোফাজ্জল হোসেন জানান, "সংঘর্ষের বিষয়ে তাঁর জানা নেই।"
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, "মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল কবির সোমবার দুপুরে মন্দিরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে তাঁর পক্ষের নেতা–কর্মীরাই উপস্থিত ছিলেন। মঞ্জুরুল করিম দেশের বাইরে থাকায় তিনি ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রেখেছিলেন। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে তাঁর কর্মীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। একপর্যায়ে গোলাগুলিও হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শেখ ফরিদ জানান, "বেলা আড়াইটার দিকে পিঠে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।"
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাহেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"