প্রতিনিধি নীলফামারী

কসাই বাদশা মিয়ার দোকানে ক্রেতাদের ভিড়, ৬১০ টাকায় সাশ্রয়ী ষাড় গরুর মাংস কিনছেন তারা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নীলফামারী-সৈয়দপুর মহাসড়কের ঢেলাপীর বাজারে ষাড় গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬১০ টাকা কেজিতে।

এমন চিত্র দেখা গেছে, যেখানে লোকজনের লাইন লেগে গেছে মাংস কিনতে। বাজারের বাদশা গোস্ত ভান্ডারের মালিক বাদশা মিয়া, নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের কথা চিন্তা করে বাজার দর থেকে কম দামে মাংস বিক্রি করছেন। সৈয়দপুর শহরে গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এবং সেখানে ষাড়ের মাংস পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে।

বাদশা মিয়া মানুষের সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করে কম দামে মাংস বিক্রি শুরু করেছেন। দোকানটি শহরের উত্তরা আবাসনের কাছে হওয়ায় সেখানে সকাল থেকে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষজন ভিড় করছেন। কেউ এক-দুই কেজি করে, কেউবা আরও বেশি পরিমাণে গরুর মাংস কিনছেন। শুরু দিনেই দেশি ও শংকর জাতের পাঁচটি ষাঁড় গরুর মাংস বিক্রি হয়ে গেছে।

বাদশা মিয়ার এই উদ্যোগের জন্য সৈয়দপুর শহরজুড়ে প্রশংসা হচ্ছে। মাংস কিনতে আসা রফিক মিয়া (৩৬) বলেন, “দুই কেজি মাংস কিনেছি ৬১০ টাকা কেজি দরে। সৈয়দপুর বাজার থেকে নিলে ৭০০ টাকা দিতে হতো। বাদশা মিয়ার উদ্যোগে আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের উপকার হয়েছে।”

গোলাহাট থেকে মাংস কিনতে আসা ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মাবুল হোসেন (৩৪) জানান, “কম দামে পাওয়ায় অনেকদিন পর এক কেজি গরুর মাংস কিনেছি। বাসায় গিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে খাবো।”

আসমা বেওয়া (৫৫) নামে এক নারী আধা কেজি মাংস কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বলেন, “গত ছয় মাস মাংস খাইনি। কম দামে পেয়ে আজ অনেকদিন পর আধা কেজি মাংস কিনেছি।”

দোকানের সামনে জবাই করা গরু এবং সেখানেই যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মাংস দোকানে তোলা হচ্ছে। মানুষজনও যার যার সাধ্যমতো মাংস কিনছেন।

কসাই বাদশা মিয়া  জানান, “আমি পেশাদার কসাই। শুধুমাত্র নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের কথা চিন্তা করেই কম দামে মাংস বিক্রি শুরু করেছি। প্রতিদিনই এই দামেই বিক্রি চলবে।”

তিনি আরও বলেন, “শুরু দিনেই ২ থেকে আড়াই মণ ওজনের পাঁচটি গরু জবাই করে বিক্রি শেষ করেছি। পাশের পশুর হাট থেকে ৭০ হাজার থেকে ৯০ হাজারের মধ্যে ভালো মানের গরু পাওয়া যায়। তাই খরচ কম এবং প্রতি কেজিতে ১০-১৫ টাকা লাভ হয়।”

শহরের অন্যান্য কসাইরাও দাম কমানোর কথা জানিয়েছেন। তারা বলেন, “এটি ভালো উদ্যোগ। বাদশা যদি পারেন, তবে আমরাও পারব।”