প্রতিনিধি বাঘা
পদ্মার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে চরের শতাধিক পরিবার, নেই আশ্রয় বা স্থায়ী বসবাসের নিশ্চয়তা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১১টি চরের মানুষ পদ্মার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে জমি পাচ্ছেন না। দেড় থেকে দুই সপ্তাহ ধরে শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
চরের বাসিন্দা ওমর ফারুক জানান, "তাঁর পরিবার একসময় শতাধিক বিঘা জমির মালিক ছিল। কিন্তু পদ্মার ভাঙনে সব জমি হারিয়ে তিনি এখন ভূমিহীন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে চারবার বাড়ি স্থানান্তর করেছেন। তার বাবা ২৫ বছর আগে এবং দাদা ৩৫ বছর আগে মারা গেছেন। বৃদ্ধা মা শুকুরজান বেওয়াকে নিয়ে চার কাঠা জমি চুক্তিতে নিয়ে ঘর তুলে বসবাস করছিলেন, যা দুই সপ্তাহ আগে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন কোনো জমি নেই, আর সামান্য আয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে।"
রহিম উদ্দিন নামের আরেক ব্যক্তি জানান, "তাঁর ৬ বিঘা জমি পদ্মার গর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে তিনি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন, কিন্তু ঘর তোলার মতো জমি পাচ্ছেন না। আগে ১০ কাঠা জমি চুক্তিতে নিয়ে ঘর বানিয়েছিলেন, এখন সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। তার মতো শতাধিক পরিবার সহায়-সম্বল হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়েছে।"
প্রতিবছর নদী ভাঙনের ফলে এসব পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। চরের মানুষ অন্যের জমিতে চুক্তিতে আশ্রয় নিয়ে জীবন কাটাচ্ছে, কিন্তু এখন জমি না পেয়ে দিন দিন তাদের দুর্ভোগ বাড়ছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম জানান, "অনেকেই বন্ধকী জমি বা কারও আঙিনায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।"
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, "নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু পরিবার খোলা আকাশের নিচে বাস করছে। তাদের সাহায্যের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।"