রাজশাহী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের সোয়েটার কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। বুধবার দুপুরে রাজশাহী নগরের বিসিক এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

প্রতিনিধি রাজশাহী: বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের সোয়েটার কারখানার বিদ্যুৎ–সংযোগ আগেই বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। এরপর গ্যাস দিয়ে জেনারেটর ব্যবহার করে কারখানাটি চালানো হচ্ছিল। এবার গ্যাসের বিল বকেয়া পড়ায় গ্যাস–সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেখে শ্রমিকেরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

কারখানার ব্যবস্থাপক সজল আহমেদ বলেন, কারখানায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা এসেছেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন। শ্রমিক, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। কী সমাধান হয় সেটা পরে জানানো হবে।

রাজশাহী নগরের বিসিক এলাকায় সাকোয়াটেক্স লিমিটেড নামের এ কারখানার অবস্থান। এটি এনা গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। সাবেক এমপি এনামুল হক এনা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি নবম, দশম ও একাদশ সংসদে রাজশাহী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন। দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শ্রমিকেরা জানান, কারখানায় প্রায় ৩৫০ জন শ্রমিক আছেন। কারও তিন মাস, কারও ছয়, সাত কিংবা আট মাস বেতন বকেয়া। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করার কারণে কয়েক মাস আগেই কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর গ্যাসে জেনারেটর চালিয়ে কারখানা চালু রাখা হয়েছিল। গ্যাসের বিল পরিশোধ না করায় আজ এই লাইনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কারখানা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেখে বকেয়া আদায়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। বকেয়া পাওনা টাকা ছাড়া তাঁরা এবার ঘরে ফিরবেন না।

সাকোয়াটেক্স লিমিটেডের ট্রান্সপোর্ট শাখার কর্মচারী চন্দন তরফদার বলেন, বেতন চাইলে চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখানো হতো। অবশেষে গত মে মাসে এক মাসের বেতন দেওয়া হয়। এরপর তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এখনো তিনি আট মাসের বেতন পাবেন। নিদারুণ আর্থিক কষ্টে আছেন তিনি। বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে কারখানা থেকে যাবেন না।

কারখানার নিটিং বিভাগের শ্রমিক নাসিম পারভেজ বলেন, ‘আমি ৬ মাসের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাব। বেতন চাইলেই শুধু কালক্ষেপণ করা হয়েছে। সাবেক এমপি এনামুল শ্রমিকদের ভয়ে অনেক দিন ধরে কারখানায় আসেন না। নির্বাহী পরিচালক দেখাশোনা করেন। তিনিও এখন ঢাকায় বসে আছেন। কারখানায় আসছেন না। আমরা খুব বেকায়দায় পড়েছি।’