দিনাজপুর জেলার মানচিত্র

প্রতিনিধি দিনাজপুর: দিনাজপুরে জেলা বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার রাজারামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত তিনজনকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহীন ও তাঁর ছেলে আহনাফ তাসীন তানভীর (১৭)।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও দখলের অভিযোগ তুলে কয়েকজন বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করতে গতকাল দুপুরে দিনাজপুরে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক।

দলীয় সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় রাজরামপুর এলাকায় শেখপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলামের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল খালেক। সেখানে অভিযোগকারী কয়েকজনকে ডেকে তিনি কথা বলেন। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় খালেকের পথরোধ করেন জেলা বিএনপির অপর পক্ষের নেতা সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল ও তাঁর অনুসারীরা। একপর্যায়ে আব্দুল খালেক ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে সেখানে বখতিয়ার আহমেদ ও মোস্তফা কামালের অনুসারী নেতা–কর্মীরা তর্কে জড়ান। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

অভিযোগকারী দুজনের সাথে কথা বলেছে প্রতিবেদক। তাঁদের একজন দেবেন তিকরি (৫৫) বলেন, ‘রাজারামপুরে আমরা ৯৫ ঘর বসবাস করি। সরকার পতনের পরে একটা আতঙ্ক ছিল। পরদিন আমাদের এলাকায় ১০-১২টা মোটরসাইকেল আসে। সেখানে অনেকে বলাবলি করছিল, বিভিন্ন জায়গায় কচির (বখতিয়ার আহমেদ) নেতৃত্বে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। পরে একজন আমার কাছে জানতে চাইলে আমিও লুটপাটের কথা বলি। পরে বিষয়টির জন্য ভুল স্বীকার করে সবার কাছে মাফও চাইছি।’

আরেক অভিযোগকারী মো. রিশাদ বলেন, গতকাল বিকেল চারটায় রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তি তাঁকে আবিদুল ভাইয়ের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে আটক করে রাখা হয়। সন্ধ্যায় সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা আসেন। তিনি ফেসবুকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেছি, ‘আগে যে বক্তব্য দিয়েছি, ওটাই আমার বক্তব্য।’

জানতে চাইলে বিএনপির নেতা আবিদুল ইসলাম বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বখতিয়ার আহমেদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছিলেন কয়েকজন। ওই ব্যক্তিরা তাঁর এলাকার হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতা তাঁর বাড়িতে আসেন। তাঁদের ডেকে আলাপ আলোচনা করেন। তাঁরা ভুলও স্বীকার করেছেন। পরে অন্য পক্ষ অভিযোগকারীদের আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করে চড়াও হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বখতিয়ার আহমেদকে জানালে তিনিও ঘটনাস্থলে আসেন। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটে।

বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক মুঠোফোনে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ একজনের বাড়িতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে অর্থসহায়তা দিতে গিয়েছিলাম। পরে জেলা বিএপির এক নেতার অভিযোগের বিষয়ে তদন্তকাজেও ছিলাম। সেখানে অভিযোগকারীদের সাথে কথা হয়েছে। ফিরে এসে কেন্দ্রকে জানিয়েছি।’