পাবনার রূপপুরে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লিপাত্রে ‘ডামি’ জ্বালানি প্রবেশ করানো শুরু হয়েছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃদয় হিসেবে পরিচিত হচ্ছে চুল্লিপাত্র (রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল)। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এ চুল্লিপাত্রের ভেতরে পারমাণবিক জ্বালানি প্রবেশ করানো হয়। পাবনার রূপপুরে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লিপাত্রে ‘ডামি’ জ্বালানি প্রবেশ করানো শুরু হয়েছে। ১৭ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এই কার্যক্রম প্রায় দুই সপ্তাহ চলবে।
বুধবার বেসরকারি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন-রোসাটম। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরমাণু শক্তি কমিশন। ঠিকাদার হিসেবে এ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের ২টি ইউনিট নির্মাণ করছে রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট।
বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ দিয়ে তৈরি হয় পারমাণবিক জ্বালানি। সাড়ে তিন থেকে চার মিটারের একটি রড হলো মূলত ইউরেনিয়াম জ্বালানি বা পারমাণবিক জ্বালানি। অনেক রড মিলিয়ে একটি বান্ডিল তৈরি করা হয়। এই বান্ডিল মূলত ফুয়েল অ্যাসেম্বলি নামে পরিচিত। পারমাণবিক জ্বালানির বান্ডিলের আদলে তৈরি এমন ১৬৩টি ডামি বান্ডিল প্রবেশ করানো হবে। ডামি ফুয়েলের সাহায্যে রিঅ্যাক্টরের সব প্যারামিটার যাচাই নিশ্চিত হওয়ার পর প্রকৃত ফুয়েল লোড করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট, এটমটেকএনার্গো ও রসএনার্গোএটমের বিশেষজ্ঞরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আকার, আকৃতি, ওজন ও ম্যাটেরিয়াল বিবেচনায় ডামি ফুয়েল অ্যাসেম্বলি আসল ফুয়েল অ্যাসেম্বলির সম্পূর্ণ অনুলিপি। কিন্তু এতে কোনো পারমাণবিক জ্বালানি থাকে না। এই ফুয়েল লোডিংয়ের পর রিঅ্যাক্টরের সার্কুলেশন ফ্ল্যাশিং, কোল্ড ও হট টেস্ট সম্পাদন করা হবে। এই টেস্টগুলোর সফলতার ওপর নির্ভর করে রিঅ্যাক্টরের নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য অপারেশন।
রোসাটমের প্রকৌশল বিভাগ এএসইর ভাইস প্রেসিডেন্ট আলেক্সি দেইরি বলেন, অংশীদার দেশগুলোতে নতুন শিল্পের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে তার দক্ষতা ও বিশাল অভিজ্ঞতার প্রমাণ রেখে চলেছে রোসাটম। রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের নির্মাণ এবং এর স্টার্টআপ ও অন্যান্য অ্যাডজাস্টমেন্ট কার্যক্রম পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এই ইউনিটের স্টার্টআপের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার উন্নয়নের জন্য অতি প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ লাভ করবে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প রূপপুরে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। আর রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল প্রকল্পের মেয়াদ। এ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।