নিজস্ব প্রতিবেদক: পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত বাংলাদেশিদের এক গভীর চক্রান্তের শিকারে পরিণত করার পাঁয়তারা চলছে বলে উল্লেখ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা বলেছে, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা যেন হুমকির মুখে না পড়ে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তা বিবেচনায় রাখতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাত-সহিংসতা নিয়ে শনিবার জাতীয় নাগরিক কমিটির দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধানে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেওয়া উচিত। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা রাজনৈতিক। এর সমাধানও রাজনৈতিকভাবে হতে হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবাই বাংলাদেশি। যেকোনোভাবে জাতিগত বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের জনগণকে, এক জাতিকে অন্য জাতির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটি বাংলাদেশের সব জাতিসত্তাকে সম্মান করে এবং সবার অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বদ্ধপরিকর। এমতাবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে চলমান সহিংসতা বন্ধ করতে হবে এবং বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে দাঙ্গা ঠেকাতে হবে।

দেশের নাগরিক যে জাতিসত্তারই হোন না কেন, তাঁর জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে উল্লেখ করেছে নাগরিক কমিটি। তারা বলেছে, ‘সরকারকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে উসকানিদাতা ও দোষীদের শনাক্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিহত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসার মতো মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সব জাতি–ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে একটি সুসংহত রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি কাজ করে চলেছে। এই মুহূর্তে পার্বত্য চট্টগ্রামের সহিংস পরিস্থিতির আশু সমাধান দরকার। তা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সংলাপ ও রূপরেখা প্রণয়নের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া হলে জাতীয় নাগরিক কমিটি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।