আবহাওয়া অধিদপ্তর | ফাইল ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা তিন দিনের প্রচণ্ড গরমের পর অবশেষে রাজধানীর আকাশে মেঘমালা হাজির হয়েছে। শরতের মৃদুমন্দ বাতাসও বইতে শুরু করেছে। আর উপকূলজুড়ে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় গরমের দাপট কিছুটা হলেও কমেছে। তবে দেশের উত্তর–মধ্যাঞ্চলে গরম আরও বেড়েছে।
অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সোমবারের মধ্যে তা সৃষ্টি হওয়ার পর বৃষ্টি বেড়ে যেতে পারে। আগামী তিন থেকে পাঁচ দিন ধারাবাহিকভাবে বৃষ্টি বাড়তে পারে। কোথাও কোথাও গত আগস্টের মতো ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে; যা টানা তিন–চার দিন চলতে পারে।
বৃষ্টির সঙ্গে দেশের মধ্যাঞ্চল ও সিলেটে বজ্রপাত শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও দমকা হাওয়া বইছে। আবহাওয়াবিদেরা একে বর্ষা বিদায় নেওয়ার পূর্বলক্ষণ বলছেন। সাধারণত অক্টোবরের শুরুতে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয়। জুনের মাঝামাঝি সময়ে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করলে বর্ষা আসে আর বিদায় নেওয়ার পর আসে শরৎ। মৌসুমি বায়ু আসা ও বিদায় নেওয়ার সময়কালে বজ্রপাত বেড়ে যায়।
শনিবার সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকায় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি ঝরেছে। কোথাও কোথাও দমকা হাওয়া বয়ে গেছে। আগামী দু–তিন দিনের বৃষ্টির সঙ্গে ওই বজ্রপাত ও দমকা হাওয়া থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেপ্টেম্বরের ২৮–২৯ তারিখের মধ্যে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেওয়ার পর এ ধরনের আবহাওয়ারও পরিসমাপ্তি হবে।
এদিকে রাজধানীসহ সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। রাজধানীতে শনিবারও একপশলা বৃষ্টি ঝরেছে। দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। এতে অবশ্য গরমের কষ্ট খুব বেশি কমেনি। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় গরমের কষ্ট বেশি অনুভূত হয়েছে। তবে আবহাওয়াবিদদের মতে, ওই গরম আজ রোববার দ্রুত কমতে শুরু করবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চলতে থাকা তাপপ্রবাহের দাপটও কমে আসবে।
অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পূর্বলক্ষণ হিসেবে প্রচুর মেঘমালা সৃষ্টি হওয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ওই মেঘের দল চট্টগ্রাম দিয়ে দেশের উপকূলীয় এলাকায় হাজির হয়েছে। আজ তা দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত চলে আসতে পারে। এর প্রভাবেই মূলত বৃষ্টি বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে প্রচুর মেঘ সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টি বাড়তে শুরু করেছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টি ছড়িয়ে পড়তে পারে। গতকাল দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে, ৯২ মিলিমিটার। চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য জেলা ও দ্বীপগুলোতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে শনিবার দেশের সবচেয়ে উষ্ণ এলাকা ছিল রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ। সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা উঠেছিল নীলফামারীর সৈয়দপুরে, প্রায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওডিশা পর্যন্ত বিরাট এলাকাজুড়ে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। এতে বাংলাদেশের গঙ্গা অববাহিকায় পানি বাড়লেও তা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না। কারণ, নদ–নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।