ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ভারতীয় সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর জয়ন্ত কুমারসহ সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ‘শিক্ষার্থীবৃন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’–এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

গতকাল সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলা চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ফেলানি থেকে স্বর্ণা দাস, সীমান্তে আর কত লাশ’; ‘দিল্লির দাদাগিরি, মানি না মানব না’; ‘দিল্লির আগ্রাসন, জনগণ রুখে দাও’; ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’; ‘ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন প্রভৃতি স্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তারা সীমান্তে লাগাতার হত্যা, সময়ে-অসময়ে বাঁধ খুলে দেশে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি এবং ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানান। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার জন্য আহ্বান জানান তাঁরা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ নিরস্ত্র, নিরপরাধ মানুষকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিতে পারে না। কিন্তু ভারত সেটা দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই নিপীড়নকারী দেশের বিরুদ্ধে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স এবং হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানউল্লাহ খান বলেন, ‘ফেলানী থেকে শুরু করে সীমান্তে যতগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সব কটির সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। আর একটি লাশও আমরা সীমান্তে দেখতে চাই না। হিন্দু-মুসলমান নয়, এখানে যাঁরা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে রয়েছেন, তাঁদের ভূমিকার ব্যর্থতার জায়গায় আমরা প্রশ্ন করতে চাই।’

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী অনুপম রায় বলেন, জয়ন্ত নামের ১৫ বছরের একজন কিশোরকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সন্ত্রাসীরা। এই দৃশ্য আজ নতুন নয়। এর আগেও ফেলানী হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল। কিন্তু এসবের কোনো বিচার হয়নি। বর্তমান সরকারকে ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে সোচ্চার হতে হবে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন। এ সময় বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।