সাধারণ পরিষদের এ প্রস্তাবে পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৪টি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৪টি। ভোটদানে বিরত ছিল ৪৩টি দেশ।
ইসরায়েলের বোমা হামলা পর ভবনের ওপর দিয়ে কালো ধোঁয়া উড়ছে। গাজার খান ইউনিসে | ফাইল ছবি: এএফপি
পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারত্ব অবসানের আনুষ্ঠানিক দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে ১২ মাসের মধ্যে দখলদারত্ব অবসানের সময় বেঁধে দেওয়া হয় এবং এটি বাস্তবায়ন না করলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়।
তবে গতকাল বুধবার পাস হওয়া সাধারণ পরিষদের এ প্রস্তাবের আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) একটি পরামর্শমূলক মতামতের ভিত্তিতে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। আদালত বলেছিলেন, ১৯৬৭ সাল থেকে হওয়া ইসরায়েলি দখলদারত্ব বেআইনি।
সাধারণ পরিষদের এ প্রস্তাবে পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৪টি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৪টি। ভোটদানে বিরত ছিল ৪৩টি দেশ।
এ প্রস্তাবকে ঐতিহাসিক বলে প্রশংসা করেছেন ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি। তবে ইসরায়েলের দাবি, এ প্রস্তাব সহিংসতাকে উসকে দেবে। প্রস্তাবটিকে ‘বিকৃত’ ও ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।
কয়েক দিন পরই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে। এ অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা নিউইয়র্কে জড়ো হবেন। এর ঠিক আগেই এ প্রস্তাব নিয়ে বিশেষ অধিবেশন ডাকার আহ্বান জানায় আরব দেশগুলো।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের আকস্মিক হামলার জবাবে ওই দিনই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ২৭২–এ। চলমান এই যুদ্ধের এক বছর পূর্তির কয়েক সপ্তাহ আগেই সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি পাস হলো।
চলতি বছর জাতিসংঘে নতুন অধিকার পায় ফিলিস্তিন। এরপর এই প্রথম প্রস্তাবটি তোলেন ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি। এতে দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বেআইনি উপস্থিতি অবিলম্বে অবসানের দাবি জানানো হয়। প্রস্তাবের খসড়ায় এ জন্য ছয় মাস বেঁধে দেওয়া হয়। তবে পরে গৃহীত প্রস্তাবে অনূর্ধ্ব ১২ মাসের মধ্যে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়।
এদিকে বুধবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে না সৌদি আরব। তাঁর এ বক্তব্য সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মার্কিন প্রচেষ্টার জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিলে দেওয়া উদ্বোধনী বক্তব্যে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ‘ফিলিস্তিন জনগণের ওপর ইসরায়েলি দখলদার কর্তৃপক্ষের সংঘটিত অপরাধ প্রত্যাখ্যান ও এর প্রতি সৌদি আরবের তীব্র নিন্দার বিষয়টি আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি।’
সৌদি যুবরাজ আরও বলেন, ‘পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নিরলস প্রচেষ্টায় ক্ষান্ত দেবে না সৌদি আরব। একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ছাড়া সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে না, সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করছি।’
অন্যদিকে স্পেন সফরে গেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গতকাল বৃহস্পতিবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা রয়েছে। গত মে মাসে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই প্রথম স্পেন সফরে গেলেন মাহমুদ আব্বাস।