অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের অপসারণ দাবি শিক্ষার্থীদের

অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের অপসারণের দাবিতে ব্যানার সাঁটিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ভুয়া প্রত্যয়নপত্র প্রদান, একাডেমিক পরিসরে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের অপসারণ দাবি করেছেন স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও বিভাগের কার্যালয়ে লিখিতভাবে এ দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। স্নাতক পর্যায়ের ২০৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯২ জন অপসারণের দাবির পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন।

অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত স্নাতক পর্যায়ের কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ যাতে অংশ না নিতে পারেন, এমন দাবি জানিয়ে বিভাগের সভাপতি বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁর অপসারণের দাবিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে একটি ব্যানারও সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই অধ্যাপকের ব্যক্তিগত চেম্বারে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তালা।

অভিযোগে বলা হয়, মুসতাক আহমেদ বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালনের সময় বিভাগের বিভিন্ন তহবিল থেকে ৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব ছাড়ার পর তাঁর এই ঘটনা ধরা পড়ে। বিষয়টি জানিয়ে নতুন সভাপতি রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি এ টাকা বিভাগের তহবিলে জমা দেবেন মর্মে অঙ্গীকার করে বিষয়টি ফয়সালা করলেও এখনো সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেননি। এ ছাড়া বিভাগের একাডেমিক সভার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দেন। ওই প্রত্যয়নপত্র দেখিয়ে আসাদুল্লা-হিল-গালিব বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন।

অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আজ সকালে এক পোস্টে অধ্যাপক মুসতাক লিখেছেন, ‘আমার বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার বিষয়ে একটা ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। আমি বরাবর বলে এসেছি যে কোটা পদ্ধতি আমি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করি না। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে শিক্ষার্থী, ছাত্র-জনতার ওপর বুলেটের আঘাতে হত্যা করা কখনো সমর্থনযোগ্য নয়। আমার স্ট্যাটাসে শিক্ষার্থীরা কষ্ট পেয়ে ব্যক্তিগতভাবে তাদের কষ্টের কথা জানিয়েছে। কোনো মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। ভুল–বোঝাবুঝি নিজেরা বসে সমাধান করা যায়। যাঁরা বেদনাহত হয়েছেন, মার্জনা করবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক তারিকুল হাসান শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ জমা নেওয়ার সময় বলেন, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অবলম্বন করে অভিযোগপত্রটি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।