আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক সপ্তাহের মধ্যে পুনর্গঠিত হতে পারে: চিফ প্রসিকিউটর

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম | ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে রোববার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের দেখতে বেলা ১১টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যান চিফ প্রসিকিউটর। পরিদর্শন শেষে বেলা দুইটার পর হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে ব্রিফিং করেন তিনি। এ সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে গত সপ্তাহে আইন উপদেষ্টার আলোচনা হয়েছে।...উনি (আইন উপদেষ্টা) আশ্বস্ত করেছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্ভবত (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) পুনর্গঠিত হবে। আদালত পুনর্গঠিত হলে বিচারের যে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, সেটি শুরু হবে।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন প্রধানত যে কাজটির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটি হচ্ছে ‘লাইভ’ যেসব আলামত আছে, সেগুলো যত দূর সম্ভব সংগ্রহ করা এবং তদন্ত সংস্থার কাছে জমা করা। তারই অংশ হিসেবে তাঁরা সিএমএইচে গিয়েছিলেন। সেখানে ১ হাজার ২২৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। সার্জারি হয়েছে ৩৪১ জনের। এখন পর্যন্ত ১৩২ জন সেখানে ভর্তি আছেন।

গুরুতর আহত অনেকে সিএমএইচে ভর্তি হয়েছেন উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘একজন রোগীর পিঠ থেকে যে গুলি অপসারণ করা হয়েছে, সেটি একটি বড় বুলেট। সামরিক বাহিনী যে বন্দুক ব্যবহার করে, সেই বন্দুকের গুলি সেখানে পাওয়া গেছে।’ তিনি জানান, সিএমএইচে হতাহত যাঁরা গেছেন, সবার সব তথ্য—কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসার প্রমাণপত্র, অস্ত্রোপচার করে যেসব গুলি বের করা হয়েছে সেসব গুলি, সেগুলো আলামত হিসেবে চাওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশব্যাপী যেসব অপরাধ হয়েছে, যেগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ, সেগুলোর বিচার শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের আগে কোনো থানায় বা কোনো ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়ে থাকলে সেগুলো প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসব। সেই তদন্তটা মূলত করবে আমাদের তদন্ত সংস্থা। তদন্ত করে তা ট্রাইব্যুনালের কাছে মামলা আকারে উপস্থাপন করব। সে ক্ষেত্রে মামলা কয়টা হবে, সে বিষয়টা পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে।’

বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর সময়কাঠামো (টাইম ফ্রেম) প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আদালত এখনো গঠিত হয়নি।...ছয়জনমাত্র তদন্তকারী কর্মকর্তা এখন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।...প্রসিকিউশনে ২০ থেকে ২৫ জন প্রসিকিউটর দরকার। আমরা মাত্র এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি, চারজন যোগদান করেছেন।…এর বাইরে তথ্যপ্রমাণ (এভিডেন্স) সংগ্রহের ব্যাপার রয়েছে।’ তিনি বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর সময়কাঠামো নিয়ে এত তাড়াতাড়ি মন্তব্য করা যায় না।