মো. নাছির | ছবি: র‍্যাবের সৌজন্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: পাবনায় ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে গুলি করে দুই শিক্ষার্থীকে হত্যার অভিযোগে মো. নাছির (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে সোমবার ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

র‍্যাব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট পাবনা সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলছিল। এ সময় পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদের নেতৃত্বে কিছু সন্ত্রাসী আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে মাহাবুব হাসান নিলয় (১৪) ও জাহিদুল ইসলাম (১৮) নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। ওই হামলা ও গুলিবর্ষণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি র‍্যাবের নজরে আসে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. নাছির (৪৫) সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় অস্ত্র হাতে তাঁর উপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বেলা সোয়া ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভে নামেন ছাত্র-জনতা। পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটক থেকে তাঁরা মিছিল নিয়ে শহরের ট্রাফিক মোড়ে এসে বিক্ষোভ করতে থাকেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীদের দিকে কয়েকটি গুলি ছোড়েন কয়েকজন। এতে দুই ছাত্র নিহতের পাশাপাশি অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় ক্ষুব্ধ লোকজন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদের গাড়িতে আগুন দেন। বিক্ষুব্ধ লোকজনের দাবি, ওই গাড়ি থেকে নেমে গুলি করা হয়।

গুলিতে নিহত দুজন হলেন সদরের চর বলরামপুর গ্রামের দুলাল উদ্দিনের ছেলে ও পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম ও হাজিরহাট বেতেপাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ও শহরের সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র মাহবুব হাসান নিলয়।

এ ঘটনায় জাহিদুলের বাবা মো. দুলাল উদ্দিন পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় পাবনা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুকসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১০৩ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ছাত্রদের দিকে গুলি করার হুকুম দেওয়ার অভিযোগে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদকে মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে।