গাজীপুর মহানগরের পোড়াবাড়ি এলাকায় সুফি ফসিহ উদ্দিন (রহ.)–এর মাজারে শুক্রবার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি গাজীপুর: অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে গাজীপুর নগরের পোড়াবাড়ি এলাকায় একটি মাজার ভাঙচুর করেছেন স্থানীয় কিছু বিক্ষুব্ধ মানুষ। আজ শুক্রবার দুপুরে পোড়াবাড়ি বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা ভাঙচুর হওয়া মাজারের বিভিন্ন জিনিসে আগুনও ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
মাজারটি স্থানীয়ভাবে ‘শাহ সুফি ফসিহ উদ্দিন (রহ.) মাজার’ নামে পরিচিত। এটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে পোড়াবাড়ি বাজার এলাকায় অবস্থিত।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মাজারটি প্রতিষ্ঠিত হয় আশির দশকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিদিনই মাজারটিতে আসা-যাওয়া ছিল বিভিন্ন এলাকার ভক্তদের। মাজারটি ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা, মসজিদ ও একটি এতিমখানা। আজ জুমার নামাজের পর হঠাৎ স্থানীয় কয়েক শ ব্যক্তি মাজারটিতে হামলা চালান। মাজারের মূল ফটক, কবরস্থান, দানবাক্স ভাঙচুরসহ বিভিন্ন জিনিসে আগুন ধরিয়ে দেন। একপর্যায়ে একটি বুলডোজার দিয়ে মাজারের বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
কথা হলে শাহ সুফি ফসিহ উদ্দিন হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হইসি মাত্র। এর মাঝেই দেখি কয়েক শ লোক মিছিল নিয়ে মাজারের দিকে আসতেছেন। এরপর কোনো কথা না বলেই তাঁরা মাজারে ভাঙচুর চালানো শুরু করেন। মাজারের গেট, খাদেমের ঘর, কবরস্থান—সব ভেঙে ফেলেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর লোকজন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। এই মাজারের দানবাক্সে যে টাকা জমা পড়ত, তা দিয়েই চলত মাদ্রাসা ও এতিমখানার খরচ।’
তবে ভাঙচুর করা ব্যক্তিদের দাবি, মাজার শিরকের অংশ, বেদাতি কর্মকাণ্ড। এখানে মাজারের আড়ালে অসামাজিক কাজকর্ম চলত। মাদকের আড্ডা বসত। তাই এসব এলাকার লোকজন এক হয়ে মাজারটিতে ভাঙচুর চালান।
গাজীপুর মহানগরের পোড়াবাড়ি এলাকায় সুফি ফসিহ উদ্দিন (রহ.)–এর মাজারে শুক্রবার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগরের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ফোর্স পাঠিয়েছি। কে বা কারা ভাঙচুর করেছে, কেন ভাঙচুর করেছে, সে বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ ও দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যাবে।