তৈরি পোশাকশিল্প | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: তৈরি পোশাকশিল্পে চলমান শ্রম অসন্তোষ নিরসনে পাঁচটি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। পরামর্শগুলো হচ্ছে মজুরিকাঠামো ও নীতি সংস্কার, শ্রম আইন সংস্কার ও আইনি সুরক্ষা শক্তিশালী করা, শক্তিশালী শিল্প–সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুরক্ষা এবং পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

আইএলওর ঢাকা কার্যালয় আজ রোববার এক বিবৃতিতে এসব পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, তৈরি পোশাক ও অন্য খাতের শ্রমিকদের বিভিন্ন অভিযোগ থেকে উদ্ভূত অসন্তোষের ঘটনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা। এই অসন্তোষের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতিগত সমস্যা উঠে এসেছে, যা যথাযথ মনোযোগ ও সমাধানের দাবি রাখে।

একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় কাজ করছেন শ্রমিক | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

শ্রম অসন্তোষ নিরসনে কারখানার মালিক, শ্রমিক ও সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনার ওপর জোর দেয় আইএলও। সংস্থাটি বলেছে, সামাজিক সংলাপ বিভিন্ন অংশীজনকে নিয়ে সমাধান ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে সহযোগিতা করে, এটি সুশাসনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এটি শুধু টেকসই ব্যবসা অনুশীলন ও উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা নয়; বরং সামাজিক ন্যায়বিচার ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে অবদান রাখে।

আইএলও মজুরিকাঠামো ও নীতি সংস্কারের বিষয়ে বলেছে, ন্যায্য মজুরি নির্ধারণের জন্য একটি প্রমাণভিত্তিক ও লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল জাতীয় মজুরি নীতি প্রণয়ন করা দরকার। ন্যূনতম মজুরি ব্যবস্থার সংস্কার এবং শ্রমিক ও মালিকদের পরামর্শ অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে মজুরি–সম্পর্কিত অভিযোগ সমাধানের পাশাপাশি জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় মজুরি নির্ধারণে সাহায্য করবে। এ ছাড়া শ্রম আইন ও আইনি সুরক্ষা শক্তিশালী করার বিষয়ে সংস্থাটি বলেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে বাংলাদেশের শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে। একই সঙ্গে আইনটি আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসহ (ইপিজেড) সব শ্রমিকের জন্য বাধ্যতামূলক করা।

এ ছাড়া শক্তিশালী জাতীয় শিল্প–সম্পর্ক ব্যবস্থা নিশ্চিতে আইএলও একটি স্বাধীন বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনের পাশাপাশি মামলা পরিচালনা উন্নয়নে শ্রম আদালত ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। সামাজিক সুরক্ষায় সংস্থাটির পরামর্শ আইএলও কনভেনশনের সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সামাজিক সুরক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যা বাংলাদেশের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ বাড়বে। এ ছাড়া পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য (ওএসএইচ) নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারকে ওএসএইচ কনভেনশন ১৫৫ ও ১৮৭ অনুসমর্থন করে একটি সমন্বিত জাতীয় ওএসএইচ পদ্ধতি উন্নয়নে পরামর্শ দিয়েছে আইএলও।