প্রতিনিধি কুমিল্লা: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান অভিযুক্ত শেখ আক্তার হোসেন (৩৫) স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের (ইউপি) ভাই। ভুক্তভোগীর পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত আক্তার বিভিন্নভাবে তাঁদের হুমকি দিচ্ছেন। এতে তাঁরা আতঙ্কে আছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আতিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছেন ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী শিশুটি বর্তমানে একটি হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্ত শেখ আক্তার হোসেন মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা এলাকার বাসিন্দা। তিনি বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেনের ছোট ভাই।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী শিশুটি উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে অভিযুক্ত আক্তার হোসেন প্রায়ই তাঁকে উত্ত্যক্ত করেন। গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটি বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে পূজার জন্য তুলসীর পাতা আনতে পাশের বাড়িতে যায়। তখন পাশের বাড়ির এক নারী তাকে ডেকে ঘরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই আক্তার হোসেন এবং তাঁর সহযোগী শামু চন্দ্র অবস্থান করছিলেন। এ সময় শামু চন্দ্রকে পাহারায় রেখে শেখ আক্তার শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। পরে ভুক্তভোগী কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি গিয়ে মা–বাবাকে ঘটনা খুলে বললে তাঁরা মেয়েকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। শিশুটির বাবা থানায় অভিযোগ দেওয়ার চেষ্টা করে সহযোগিতা না পেয়ে আদালতে মামলা করেছেন বলে আরজিতে উল্লেখ করেছেন।
মামলার বাদী বলেন, ‘অভিযুক্ত আক্তার হোসেনের বড় ভাই ইউপি চেয়ারম্যান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও এখনো এলাকায় তাঁদের প্রভাব রয়েছে। তাঁরা রাজনৈতিক প্রভাবে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। আমি আতঙ্কে আছি। তাঁদের অনেক ক্ষমতা। আমি নিরীহ মানুষ। আমি আমার মেয়ের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের ন্যায়বিচার চাই।’
আইনজীবী আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। ঘটনার পর থেকে তিনি ও তাঁর লোকেরা নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। মামলা করলে তাঁদের এলাকাছাড়া করার ভয় দেখাচ্ছেন। আমরা মামলার আরজিতে বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শেখ আক্তার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদালতে মামলার পর তিনি এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।
পিবিআইয়ের কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘মামলার কপি এখনো আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’