কারও কারও জন্য এই বৃষ্টি স্বস্তি বয়ে আনলেও অনেকেই পড়েন ভোগান্তিতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলা পঞ্জিকায় আশ্বিনের ১১ তারিখ আজ। শরতের শেষাংশে এসে দেখা মিলছে বর্ষার চিত্র। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জনজীবন। বিশেষ করে ঢাকার শ্রমজীবী মানুষের জীবনে এমন বৃষ্টি যেন অভিশাপের মতো। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রিকশা চালানো, বোঝা টানা অথবা ফুটপাতে কোনও কিছু বিক্রি করা দুরূহ হয়ে ওঠে এই সময়ে। একইসঙ্গে অফিসগামী চাকরিজীবী কিংবা শিক্ষার্থীরাও পড়েন বিপাকে। বৃষ্টিতে গণপরিবহন যেমন সংকট দেখা দেয়, তেমনি বৃষ্টির পানি আটকে অলি-গলিতে শুরু হয় বাড়তি যানজট।

ঢাকায় বৃষ্টি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এমন পরিস্থিতিতে আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, গতকালের মতো আজ বৃহস্পতিবারও সারা দিন থেমে থেমে এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের শঙ্কাও আছে। তবে আগামীকাল এই বৃষ্টি অনেকটাই কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে অধিদফতর।

দ্বিতীয় দিনের মতো বৃষ্টি হলেও বৃষ্টির পরিমাণ খুব বেশি না। গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কুমারখালীতে ১০৪ মিলিমিটার।এ ছাড়া ঢাকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৪৪ মিলিমিটার।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা আছে। আজও দিনভর থেমে থেমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হবে। তবে আগামীকাল থেকে এই বৃষ্টি কমে আসতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ মধ্য প্রদেশ, উড়িষ্যা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

ঢাকায় বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৪৪ মিলিমিটার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্বাভাসে বা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এদিকে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির কারণে গতকালকের মতো আজও সাগরে তিন নম্বর এবং নদীতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে দুপুর নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হলে সমুদ্র বন্দরের সংকেত নামিয়ে ফেলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের ভারী বর্ষণের সতর্কবাণীতে বলা হয়, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে। পাশাপাশি ভারী বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কাও রয়েছে।

অন্যদিকে আজ ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।