রূপপুর প্রকল্পের শ্রমিক হত্যার ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটনের কাছাকাছি পুলিশ

সিরাজ ফকির | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি প্রকল্পের নিরাপত্তারক্ষী সিরাজ ফকির (৬৫) হত্যাকাণ্ডে থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের ছেলে আল আমিন বাদী হয়ে রোববার সন্ধ্যায় পাবনার ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ৬-৭ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গত শনিবার নিখোঁজের সাত দিন পর একটি বাড়ির কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সে উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কৈকুন্ডা গ্রামের মৃত জলিল ফকিরের ছেলে। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন।

এদিকে হত্যার ঘটনায় শাহজাহান (২৯) নামে সন্দেহভাজন এক যুবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে এরই মধ্যে ঘটনার নেপথ্যে কাহিনি জানতে পেরেছে বলে দাবি পুলিশের। তদন্তের স্বার্থে এখনই এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শনিবার দুপুরে শহরের শৈলপাড়া এলাকার প্রয়াত সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল খালেক রবির ফ্ল্যাটের পাশের বাসা থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে চারতলা বাসার ওই দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের হাত ও মুখ বাঁধা ছিল। বিষয়টি পরিবারকে জানানো হলে তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।

স্থানীয়রা জানান, সিরাজ ফকির তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়মিত রূপপুর প্রকল্পে চাকরি করতে যেতেন। সাত-আট বছর আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান। ২৪ আগস্ট তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডিউটিতে গিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেননি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে ২৬ আগস্ট ঈশ্বরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

সূত্র জানায়, সিরাজ ফকিরের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। নিখোঁজের পর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা সিরাজ ফকিরের ছোট ছেলের মোবাইল ফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের টাকা দাবি করে আসছিলেন।

থানা পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বৃদ্ধ সিরাজ ফকির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কিছু গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে সন্দেহভাজন এক যুবকে আটক করা হয়। আটকের পর তাকে থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক অসংলগ্ন বক্তব্য দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সিরাজ ফকির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আটক ব্যক্তি ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে শিগগিরই গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অবহিত করা হবে।